বিয়ের ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপ ম্যাচিং বর্তমান সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এর সঠিক ম্যাচিংয়ের ওপরই নির্ভর করে পরবর্তী প্রজন্মের সুস্থতা। এছাড়া যদি হয় 'ও' নেগেটিভ। তাহলে তো বড় অসুখ সহজেই হামলা করে বসতে পারে শরীরে। তাই 'ও' নেগেটিভ গ্রুপের মানুষকে আগে থেকেই অতিরিক্ত সচেতন থাকতে হয়। তবে শুধু নেগেটিভ বা পজেটিভ নয়, 'এ', 'বি', 'ও' এবং 'এবি' গ্রুপের ওপরও নির্ভর করে নানা রোগের ধরণ ও প্রবণতা। আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন গ্রুপের রক্তবহনকারীকে কোন কোন রোগ থেকে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
১. আলসার : রক্তের গ্রুপ যাদের 'ও' তাদের অন্য আর যে কারুর চেয়ে আলসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। 'ও' গ্রুপের রক্তধারীদের পাকস্থলীর আলসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
২. হৃদরোগ : যাদের রক্তের গ্রুপ এবি বা বি তাদের হার্টের রোগ বা হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে প্রবল। আর যাদের ও গ্রুপের রক্ত তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
৩. রক্ত জমাট বাধা : 'এ' ও 'বি' গ্রুপের রক্তের অধিকারীদের ৩০% ঝুঁকি থাকে এই সমস্যা হওয়ার। আর যাদের রক্তের গ্রুপ 'ও' তাদের রক্ত জমাট বাধার ঝুঁকি কম। আর 'এবি' গ্রুপের রক্ত আছে যাদের তাদের রক্ত জমাট বাধার ঝুঁকি ২০%। এ থেকে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
৪. গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার : 'ও' গ্রুপের রক্তধারী লোকদের গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম। কিন্তু অন্যান্য রক্তের গ্রুপধারীদের এবং বিশেষ করে 'এ' গ্রুপের রক্তধারীদের গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার ঝুঁকি অনেক বেশি।
৫. অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার : 'ও' গ্রুপের রক্তধারীদের অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম। কিন্তু 'এ' গ্রুপের রক্তধারীদের অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ৩২% আর 'এবি' গ্রুপের রক্তধারীদের এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৫১%।
৬. স্মৃতির দুর্বলতা : 'এবি' গ্রুপের রক্তধারীদের শেষ বয়সে গিয়ে স্মৃতির দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। জার্নাল নিউরোলজিতে প্রকাশিত গবেষণা মতে, যাদের রক্তের গ্রুপ 'এবি' তারা জ্ঞানীয় দক্ষতার পারফর্মেন্স টেস্টে কম স্কোর পেয়েছেন। 'এবি' গ্রুপের রক্তের জমাট বাধা এবং রক্তের প্রোটিনজনিত কিছু সমস্যার কারণে স্মৃতির এই সমস্যা হয় বলে জানা গিয়েছে।
৭. মানসিক চাপ : 'এ' গ্রুপের রক্তধারীরা মানসিক চাপ সহজে মোকাবিলা করতে পারেন না। কেননা 'এ' গ্রুপের রক্তধারীদের দেহে কর্টিসোল হরমোনের নিঃসরণ হয় বেশি। আর 'ও' গ্রুপের রক্তধারীদের দেহে কর্টিসোল নিঃসরণ হয় কম। কিন্তু মানসিক চাপের সময় তাদের দেহে অতিরিক্ত অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণ ঘটে। যে কারণে তারা তাদের সিস্টেমে থাকা কোনো কর্টিসোল পরিষ্কার করতে পারেন না। ফলে তারাও মাননিসক চাপ মোকাবিলা করতে পারে না সহজে। এজন্য এই ধরনের মানসিক অবসাদের রোগীদেরকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে মনোচিকিৎসা করাতে হয়।
৮. দেহে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়ায় পূর্ণ : আপনার রক্তের গ্রুপ যদি হয় 'বি' তাহলে আপনি ভাগ্যবান। কারণ আপনার দেহ অসংখ্য ব্যাকটেরিয়ায় পরিপূর্ণ। তবে ভয়ের কিছু নেই। এগুলো সব উপকারী ব্যাকটেরিয়া। এগুলো হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী রাখতে এবং বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়াদের দূরে রাখতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে। 'বি' গ্রুপের রক্তধারীদের দেহে ও বা 'এ' গ্রুপের রক্তধারীদের চেয়ে ৫০ হাজার গুন বেশি ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে। তার মানে 'বি' গ্রুপের রক্তধারীদের হজমশক্তি বেশি হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি শক্তিশালী থাকে।