আগামী লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করল সংখ্যালঘু এক ছাত্র সংগঠন। বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ছাত্র সংগঠন এসআইও পশ্চিমবঙ্গ শাখার পক্ষ থেকে একটি ‘স্টুডেন্টস ম্যানিফেস্টো’ প্রকাশ করা হয়। তাতে দেশের ও ছাত্রদের স্বার্থে নানা দাবি পেশ করা হয়। এসআইওর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি ওসমান গনি এই ‘স্টুডেন্টস ম্যানিফেস্টো’ প্রকাশ করার পর বলেন, “ছাত্র এবং যুবকরা এই দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি ও ভোটদাতা। তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভোট চাওয়ার আগে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে ছাত্র এবং যুবকদের প্রয়োজনগুলোকে মনে রাখা দরকার এবং সেগুলি পূরণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। আমরা স্টুডেন্টস ম্যানিফেস্টোর মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম এই ছাত্র-যুবকদের কল্যাণ, উন্নতি ও নিরাপত্তা কে সুনিশ্চিত করতে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির সামনে দাবী জানাই। তিনি আরও বলেন যে ছাত্র ও যুবকদের ন্যায্য দাবীকে বিভেদমূলক ও বিদ্বেষমূলক রাজনীতি দিয়ে দমিয়ে রাখা এবং তাদেরকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।”
এদিন তিনি স্টুডেন্টস ম্যানিফেস্টোতে উল্লেখিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। এবং জানান, এসআইও চায় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইস্তেহারে নিম্নোক্তপ্রস্তাব সুবিবেচনার সহিত অন্তর্ভুক্ত করবে। সেই সাথে পরবর্তীতে এই বিষয়গুলো কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কর্মসূচীতে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
নির্বাচন নিয়ে এসইওর প্রস্তাব ও সুপারিশ:
ক) শিক্ষার সহজলভ্যতা
১) রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র এবং শিক্ষক উভয় ক্ষেত্রেই মুসলিমদের জন্য ১০ শতাংশ এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ সংরক্ষণ বাস্তবায়ন করতে হবে।
২) RTE ACT- ২০০৯ এর ৩ নাম্বার ধারায় উল্লেখিত ‘কমন স্কুল সিস্টেম এর উপর ভিত্তি করে ‘নিবারহুড স্কুল প্রকল্প' কে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩) অভিভাবকদের মধ্যে শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রযোজনীয়তা বৃদ্ধি করতে এলাকা ভিত্তিক শিক্ষা সচেতনতা প্রচার অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
৪) শিক্ষা ব্যবস্থাকে সহজলভ্য করতে সর্বস্তরের পড়ুয়াদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য ট্রেন ও বাসে বিনামূল্যের টিকিট প্রদান করতে হবে।
৫) পড়ুয়াদের জন্য রাজ্য স্তরে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যবীমা শুরু করতে হবে। ছাত্র-পরবর্তী জীবনে এই স্বাস্থ্যবীমাকে সাধারন স্বাস্থ্যবীমার আওতাভুক্ত করতে হবে।
৬) সরকারের উচিত বিশেষ মেধা সমন্ন শিশুদের (CSWN) প্রতি মনযোগী হওয়া। তাদের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, পাঠ্যক্রম, বইপত্র, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক এবং সহকারি কর্মী নিশ্চিত করতে সরকারের অনেক বেশি যত্নবান হওয়া দরকার।
৭) সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের জন্য মাওলানা আজাদ ন্যাশনাল ফেলোশিপ (MANF) এবং এসসি (SC) ও এসটি (ST)-দের জন্য নির্ধারিত রাজীবগান্ধী ন্যাশনাল ফেলোশিপের(RGNF) জন্য নতুন করে জারি করা UGC-NET পাশ বাধ্যতামূলক সংক্রান্ত নিয়মকানুন উচ্চ শিক্ষায় ইছুক পড়ুয়াদের বঞ্চিত করছে। এই বর্ধিত নিয়ম-কানুন অবিলম্বে সংশোধন করে ফেলোশিপের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৮) সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কমিশন শক্তিশালী করে কার্যকারী করতে অর্থনৈতিক বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
৯) উচ্চ শিক্ষায় সংখ্যালঘু, এসসি এবং এসটিদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি করতে কেন্দীয় সরকারের পক্ষ থেকে নতুন আইন জারি করতে হবে।
১০) Equal Opportunity Cell (EOC) সমস্তশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুনিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে এর মধ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
১১) লিঙ্গভিত্তিক প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে পৃথক বিদ্যালয় ও কলেজ গড়ে তুলতে হবে।
১২) আলিগড় মুসলিম বিশ্বিদ্যালয়ের মুর্শিদাবাদ শাখার সার্বিক উন্নয়নের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct