পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই মুহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের মৃত্যু সংবাদ নিয়ে যখন জল্পনার পাহাড় তখন পাকিস্তানের শীর্ষ টিভি চ্যানেল জিও নিউজ জানিয়েছে ব্যাপারটা একেবারেই ঠিক নয়।
জিও নিউজ বলেছে, মারাত্মক কিডনি রোগ আক্রান্ত জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহারের মৃত্যু হয়নি, সে এখনো বেঁচে আছে। তবে মাসুদ আজহার কেমন আছে তা নিয়ে কিন্তু কোনো খবর জানায়নি। শুধু বলা হয়েছে কোনো তথ্য আপাতত নেই।
উর্দু টিভি চ্যানেল জিও নিউজ আরো জানিয়েছে, মাসুদ আজাহার মারা গিয়েছে বলে যে খবর প্রচার হয়েছে তা ভুল।
উল্লেখ্য, জইশ প্রধানের মৃত্যু নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে রবিবার বিকেল থেকে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও তা প্রচার করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা বিতর্ক আরো উস্কে দেয়।
তা নিয়ে আসরে নামে পাক সংবাদ মাধ্যমগুলো। তারা ফলাও করে প্রচার করে মাসুদ আজহারের শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো তথ্য না পাইয়া গেলেও সে মারা যায়নি। এ ব্যাপারে এক পাক সংবাদ মাধ্যমকে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরি বলেছেন, মাসুদ আজহার নিয়ে এখনো তার কিছু জানা নেই।
তবে, পাকিস্তানের তরফে মাসুদ আজহারের প্রকৃত তথ্য সামনে না আনার পিছনে কোনো কারণ আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাক মদদপুষ্ট জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহার কিডনি চিকিৎসার জন্য পাক সেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে খবর সামনে এসেছিল। যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে। কিন্তু কোথায় মাসুদ আজহার তা নিয়েও চুপ পাকিস্তান। তাই পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ দৃঢ় হচ্ছে যে, তারা মাসুদ আজহার নিয়ে কিছু তথা প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না। তসর পেছনে বড় কারণ থাকতে পারে। ইতিমধ্যে আমেরিকা ও রাষ্ট্র সংঘ থেকে পাকিস্তানকে চাপ দেওয়া হয়েছে। তার জেরে সেখানে জইশ এ মুহাম্মদ নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছে। তার পরও নীরব মাসুদকে নিয়ে।
যদি সত্যি সত্যি মাসুদ আজহার মারা গিয়ে থাকে সে কথাও বাইরে আনতে চাইছে না পাকিস্তান। যেহেতু ভারতের তরফে দাবি করা হয়েছে বালাকোটে জঙ্গি শিবির ধ্বংসে মাসুদ আজহারের আত্মীয়রা মারা গিয়েছে, তাই ফের দাবি উঠতে পারে মাসুদ আজহার ভারতীয় হানায় মারা গেছে। সেক্ষেত্রে পাকিস্তান ব্যাকফুটে যেতে পারে।
তাই এখন জোর জল্পনা, মাসুদ আজহার হয়তো সত্যি মারা গেছে, কিন্তু এখন তা জানাচ্ছে না পাকিস্তান। দিন কয়েক পরে সবাই যখন শান্ত তখন তারা চেপে যাওয়া খবর প্রকাশ করতে পারে বলে কিছু সংবাদ মাধ্যমের ধারণা।
উল্লেখ্য, মাসুদ আজহার জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই- মুহাম্মদের প্রতিষ্ঠা করে ২০০০ সালে। তার মদতে ভারতীয় যাত্রী বোঝাই বিমান কান্দাহারে অপহরণ করা হয়েছিল। তখন মাসুদ আজহার ভার্সিয় জেলে বন্দি। সেটাকে কাজে লাগায়। শর্ত দেয় মাসুদকে ছাড়লে তবে অপহৃত বিমান ছাড়া হবে। তৎকালীন বিজেপি সরকার মাসুদকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে অপহৃত ভারতীয় যাত্রীদের নিরাপদে দেশে ফেরায়। সেই থেকে মাসুদ আজহার ভারতে জঙ্গি হামলার মূল নায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাসুদ আজহার মানেই মারাত্মক জঙ্গি নেতা, এটাই এখন সর্ব পরিচিত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct