সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলার হার অস্বাভাবিক সংখ্যায় বাড়ছে। আর পরকীয়ায় আসক্ত পুরুষ-মহিলাদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবার ও সমাজে। এর ফলে বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়েছে। এতে দগ্ধ হচ্ছে পরিবার, ধুঁকছে সমাজ। এর সঙ্গে দাম্পত্য কলহ ও পারিবারিক সদস্যদের হত্যা করার মতো অপরাধও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষই পরকীয়ায় জড়াচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজের অসুস্থ বিনোদন, নিজ রুচি ও যোগ্যতার সঙ্গে জীবনসঙ্গীর মিল খুঁজে না পাওয়া, স্ত্রীকে পর্যাপ্ত সময় না দেওয়া, বিয়ের আগে-পরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ম্যারেজ বা ফ্যামিলি কাউন্সিলিং না নেওয়া, স্বামীর অর্থনৈতিক সংকট ও স্ত্রীর উচ্চাভিলাসের কারণেই নর-নারী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ছে। সমীক্ষা বলছে, শহরাঞ্চলে ৮ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে ৭ শতাংশ বিবাহিত পুরুষই বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। আর মহিলাদের মধ্যে গড়ে ০.৩ শতাংশ এ ধরনের সম্পর্কে জড়িত। এদের মধ্যে পুরুষরা তাদের মেয়ে বান্ধবী (৩২ শতাংশ) এবং আত্মীয়দের (১৫%) সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়াচ্ছে। আর যেসব পুরুষ বিয়ের আগেই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন তাদের বিয়ের পর পরকীয়ায় জড়ানোর প্রবণতা বেশি থাকে।
এ ব্যাপারে ‘বেজলাইন এইচআইভি/এইডস সার্ভে এমোং ইয়ুথ সংস্থা জানাচ্ছে, যেসব দম্পতি ডিভোসের জন্য আবেদন করেন এদের মধ্যে শতকরা ১০ ভাগ স্বামী-স্ত্রী নিজেদের সম্পর্ক ভাঙার কারণ হিসেবে পরকীয়াকে দায়ী করেন। বেইজ লাইন সার্ভেতে উল্লেখ করা হয় যে, দেশের শহর ও গ্রামাঞ্চলে ষাটের দশকের তুলনায় বর্তমানে বিবাহ বহির্ভূত ও বিবাহপূর্বক অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার হার তিনগুণ বেশি। বর্তমানে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জনই অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। সমাজবিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে পাশ্চাত্যের মতো বিশ্বের সবত্রে পারিবারিক সম্পর্কগুলোতে ভাঙন ধরবে। তবে এই অবস্থা রোধ করতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতাবিষয়ক শিক্ষা প্রদান, গণমাধ্যমে সুষ্ঠু প্রচারযোগ্য অনুষ্ঠান প্রচার ও পারিবারিক মূল্যবোধ তৈরির ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নিতে হবে।