পুলওয়ামায় ভারতীয় সিআরপিএফের ওপর জঙ্গি হামলার ১২ দিন পর ভারতীয় বায়ুসেনাও পাল্টা হামলা চালায় বালাকোটে পাকিস্তান মদদপুষ্ট জঙ্গী ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে। তবে বর্তমানে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসস্তিকর প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে নেটিজেনরা। তাদের প্রশ্ন, বালাকোটে পাকিস্তান অধ্যুষিত জঙ্গী ঘাঁটি ভারতীয় বায়ুসেনা যে উড়িয়েছে, তার প্রমাণ কোথায়? বিবিসি বলছে, হামলার পর বালাকোট এ আদতে অকাল মৃত্যু হয়েছে বেশকিছু পাইন গাছের। এছাড়া জমিতে বেশ কিছু বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার ছোড়া বোমায়। বোমায় ক্ষয়ক্ষতির তেমন কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র একজন আহত হয়েছেন। আশপাশের গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ভোরের দিকে বেশ কয়েকবার বোমা ফাটার আওয়াজ পেয়েছেন। মাটি কেঁপে ওঠে অনেকে ভেবেছিলেন বোধহয় ভূমিকম্প হচ্ছে। তাদের দাবি বালাকোটের ওই এলাকায় সম্প্রতি কোন জঙ্গী তৎপরতা ছিল না। আগে অবশ্য সেখানে জঙ্গির ঘাঁটি ছিল এবং নাশকতার তালিম দেওয়া হতো। ২০০৫ সালে কাশ্মীর ভূমিকম্পের ত্রাণ বিলি করতে আশা আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মীদের উপস্থিতিতে সেখান থেকে ঘাঁটি সরিয়ে নেয় জঙ্গিরা। তাদের দাবি, ভারতের সেনা গোয়েন্দা সংস্থার খবর পুরনো ছিল। আর সেই খবরের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ ভুল একটা সেনা অভিযান চালালো তারা।
সাম্প্রতিক অতীতের সব ঘটনা পর্যালোচনা করার পর আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন এর সঙ্গে যুক্ত জেনস ইনফরমেশন সংস্থা জানিয়েছে, বালাকোটে যেখানে মোদি সরকার জঙ্গী ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে, সেখান থেকে অনেক আগেই ঘাঁটি সরে গিয়েছিল। রাজনৈতিকভাবে প্রতীকী এই বিমান হামলার বাড়তি কোনো গুরুত্ব নেই। পুলওয়ামায় জঙ্গী আক্রমণের পাল্টায় ভারতকে কিছু করতে হতো, সেটাই লোকসভা নির্বাচনের আগে করে দেখালো মোদি সরকার। তবে এর ফলে একটাই সমস্যা তৈরি হবে, ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এর জবাবে পাকিস্তান ও পাল্টা হামলা চালাবে। এবার আর জঙ্গি হানার মাধ্যমে নয়, সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ভাবে বিপদজনক হয়ে উঠবে। এবং তার ফল ভুগতে হবে সাধারণ মানুষকে বলে জানিয়েছে ওই সংস্থার অন্যতম আধিকারিক রাহুল বেদি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct