কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের উপর স্থগিতাদেশ দিল হেগ-এ অবস্থিত অান্তর্জাতিক অাদালত৷ ভারত পাকিস্তানের যুক্তি-তর্কের পর বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক আদালতে এগারো জন বিচারপতি বিশিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চ পাকিস্তানের সেনা আদালতের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে। পরবর্তী নোটিস না আসা পর্যন্ত কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের উপর এই স্থগিতাদেশ জারি থাকবে বলে জানায় আদালত।
গুপ্তচরবৃত্তির মামলায় ভারতের প্রাক্তন নৌ কর্মী কুলভূষণ যাদবকে পাকিস্তানের আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করেছে আন্তর্জাতিক আদালত। এ মামলায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড যেন কার্যকর না হয়, তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তানকে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি হেগভিত্তিক এ আদালতের রুলে বলা হয়, কুলভূষণের জন্য কনস্যুলার সুবিধা (তার সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধিদের দেখা করতে দেওয়া) চাওয়ার অধিকার ভারতের রয়েছে।
২০১৬ সালের ৩ মার্চ কূলভূষণকে বেলুচিস্তানের মাসকেল এলাকা গ্রেফতার করা হয়। পাকিস্তানে নাশকতা ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের সেনা প্রধান জাভেদ বাওজা সামরিক আদালতে কূলভূষণের ফাঁসির রায় চূড়ান্ত করেন।ভারতের দাবি, যাদব নৌবাহিনী থেকে অবসরের পর ইরানে ব্যবসা করছিলেন। সেখান থেকে পাকিস্তান তাকে অপহরণ করেছে। কুলভূষণকে কনস্যুলার সুবিধা দেওয়ার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে ১৬ বার অনুরোধ করা হলেও তাতে সাড়া দেয়নি পাকিস্তান। এই প্রেক্ষাপটে ৮ মে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হয় ভারত। জাতিসংঘের আদালতের রায় আসার আগেই পাকিস্তান তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছিল দেশটি।
কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাসকে দেখা করতে দেওয়া নিয়ে পাকিস্তানের আপত্তিও খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালতের রায়ে বলা হয়, কুলভূষণ গুপ্তচর কিনা সেটাও এখনও প্রমাণিত হয়নি; সুতরাং পাকিস্তান কোনওভাবেই এখনই সাজা কার্যকর করতে পারে না। ভারতের আইনজীবী হরিশ সালভের অভিযোগ, যাদবকে পাকিস্তানে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী, এতে যাদবের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিনিধি আন্তর্জাতিক আদালতে দাবি করেন, কুলভূষণ যাদবকে আইনি লড়াই চালানোর জন্য আগস্ট পর্যন্ত সময় ছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct