গাড়িতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে জ্বালানি হিসেবে দরকার হয় ডিজেল অথবা পেট্রোল। যদিও বিমানে ভরা হয়ে থাকে এভিএশন ফুয়েল, জেট ফুয়েল, এভিএশন গ্যাসলাইন, বাইও ফুয়েল এসব ভিন্ন ধরনের জ্বালানি। উড়োজাহাজটিতে কোন ধরনের ইঞ্জিন লাগানো আছে এবং এটি কেমন এল্টিটিউডে ফ্লাই করে থাকে, তার ওপর নির্ভর করে কোন জ্বালানি দেওয়া হবে। বোয়িং-৭৪৭ বিমানে কেরোসিন তেল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যার ফ্রিজিং পয়েন্ট হয়ে থাকে মাইনাস ৪০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। আর এ কারণে এটি হাই এল্টিটিউটে জমে না। বোয়িং-৭৪৭ অথবা ৭৭৭ এর কথা যদি বলি, তবে এটি প্রতি এক সেকেন্ডে চার লিটার তেল পোড়ে। এর জন্য প্রতি এক সেকেন্ডে চার লিটার ফুয়েল খরচ হয়। উড়োজাহাজটির এক কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে ১২ লিটার তেলের প্রয়োজন হবে। এর একটি বড় সুবিধা হচ্ছে, একসঙ্গে ৪৬৫ জন যাত্রী নিয়ে ট্র্যাভেল করতে পারে। যদি ফ্লাইট দশ ঘণ্টার হয়ে থাকে, তবে উড়োজাহাজটির এক লাখ ৫০ হাজার লিটার তেলের প্রয়োজন হবে।
একটি উড়োজাহাজ যখন রানওয়েতে দাঁড়ানো থাকে, তখন একটি ছোট গাড়ির সঙ্গে তার সংযুক্ত করা থাকে। বেশিরভাগ মানুষই ভাবেন যে, উড়োজাহাজে ফুয়েল ভরা হয় এই গাড়ি দিয়ে। কিন্তু আসলে তা নয়। একে বলা হয় এজিপিইউ বা ওকজিলারি গ্রাউন পাওয়ার ইউনিট। এই সিস্টেমটি উড়োজাহাজে বিদ্যুৎ প্রবাহ করে। কারণ যখন উড়োজাহাজ রানওয়েতে থাকে তখন এর দুইটি ইঞ্জিনই বন্ধ থাকে। যার ফলে বিমানের ইঞ্জিন বিদ্যুৎ জেনারেট করতে পারে না। এর জন্য এটাকে বাইরের বিদ্যুৎ দিয়ে চালানো হয়, যাকে এজিপিইউ বলা হয়। উড়োজাহাজের তেলের ট্যাঙ্কটি সাধারণত এর পাখার সঙ্গে থাকে। যা ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করা। কিন্তু বিভক্ত করার পরেও এই ট্যাঙ্কগুলো এত বড় থাকে যে চার থেকে পাঁচজন মানুষ আরামে ঘুমাতে পারবে। আর সবগুলো ট্যাঙ্ক একটি আরেকটির সঙ্গে কিছু ফাঁকা স্থানের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে, যাতে উড়োজাহাজের দুইটি পাখাতেই ফুয়েলের মাত্রা সমান আকারে থাকে। যদি একটি ট্যাঙ্ক খালি হয়ে যায়, তবে আরেকটি ট্যাঙ্ক থেকে নিজেই নিজেই উড়োজাহাজের প্রধান ট্যাঙ্কে জ্বালানি চলে যায়, যার জন্য প্লেনের সব স্থানে ওজন ঠিক থাকে। সরাসরি ট্যাঙ্ক থেকে ফুয়েলের পরিবহন শুধু জেট ইঞ্জিনে থাকে। যেটি ঠিক জেট উড়োজাহাজের পাখার নিচে থাকে। কিছু প্লেনের ইঞ্জিন পাখার ওপরেও থাকে। এমন পরিস্থিতিতে এক ধরনের মোটর ব্যবহার করা হয়। যা তেলকে ট্যাঙ্ক থেকে ইঞ্জিন পর্যন্ত নিয়ে যায়।