সমীক্ষা বলছে, ভারতে ১ হাজারটি বিয়ের মধ্যে মাত্র ১৩টি বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। সমীক্ষার এই ফলাফল মোটেও সুখী দাম্পত্যের প্রতিচ্ছবি নয়। দাম্পত্য জীবন যেমনই হোক, বিয়ে টিকিয়ে রাখাই এখানে বীরত্ব। তবে বিয়ে টিকে যাওয়ার পিছনে যে সব সময়ে অগাধ প্রেম থাকে, বিষয়টা ঠিক তেমন নয়। সমীক্ষা বলছে, অনেক সময়ে কয়েকটি নেতিবাচক কারণেও বিয়ে টিকে যায়। বরং বিয়ে টিকিয়ে রাখাই বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে কিছু ক্ষেত্রে। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা, রাজস্থানে ডিভোর্সের হার সবচেয়ে কম। কারণ এসব রাজ্যে পুরুষতন্ত্রের আধিপত্য। হাজার অত্যাচারেও মহিলাদের প্রতিবাদ বিরল। বরং অত্যাচার সহ্য করে বিয়ে টিকিয়ে রাখাতেই কৃতিত্ব। আবার উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে ডিভোর্সের হার তুলনামূলক বেশি। এসব এলাকার মহিলা আর্থিক দিক থেকে বেশি স্বাবলম্বী। তারা যে কোনও অনাচারের বিরুদ্ধে সরব হন। প্রয়োজনে ডিভোর্সের আবেদনও করেন। এখানে প্রেমের সম্পর্কে বিচ্ছেদ মেনে নিলেও, ডিভোর্স নিয়ে সাবলীল নয় সিংহভাগ মানুষ। শুধু মহিলারা নয়, প্রয়োজনে পুরুষরাও দাম্পত্য জীবন খারাপ হলেও বিয়ে টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়। সাধারণত সামাজিক দায়ের কথা মাথায় রেখেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পায় অধিকাংশ মানুষ। অবশ্য ডিভোর্স আইনের ক্ষেত্রে ভারত অত্যন্ত প্রগতিশীল দেশ। স্বাধীনতার ঠিক পরেই এই বিল মহিলা, পুরুষ উভয়ের জন্য পাশ হলেও পুরো পদ্ধতিই খুব সময়সাপেক্ষ এবং খরচসাপেক্ষও। যা এড়াতে অনেকে ডিভোর্সে যান না। আবার ডিভোর্স আইনে আদালতের দোরগোড়ায় আবেদন নিয়ে গেলেও ফিরে আসেন অনেকেই। আদালতের বিচারকরাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের কথা মাথায় রেখে সম্পর্ক আবার ঠিক করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। ধর্ম অবশ্য আরও একটা কারণ। ভারতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরই সংখ্যা বেশি। হিন্দুধর্মে বিয়ে অন্যতম পবিত্র রীতি। তাই বিয়ে ভাঙা এদেশে বেশির ভাগ মানুষের কাছে ধর্মের অবমাননার সমান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct