রাজ্য সরকারের অনুদান পাওয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অন্দোলন চালিয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গের সরকার স্বীকৃত আন এডেড মাদ্রাসাগুলি। তাদের দাবি ভারতীয় সংবিধানের ৩০ ধারায় সংখ্যালঘু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে সরকারি অনুদান দেওয়ার ব্যাপারে বৈষম্য করা যাবে না, এমন উল্লেখ রয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় তো দূরের কথা আন এডেড মাদ্রাসার শিক্ষকদেরও বেতন দিচ্ছে না। অথচ, ২০১৩ সালে রাজ্যের সংখ্যাললঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষঅ দফতরের প্রধান সচিব এক সার্কুলারে আন এডেড মাদ্রাসাগুলিকে সরকারি আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছিলেন। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও রাজ্য সরকারের এক শ্রেণির আধিকারিকের উদাসীনতায় আন এডেড মাদ্রাসায় সেই আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে মাসখানেক আগে বিভিন্ন জেলায় নানা প্রতিবাদ মিছিল করেছে আন এডেড মাদ্রাসা শিক্ষকরা। এমনকী জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও প্রদান করেছে। তারপরও সরকার কোনও সক্রিয়তা না দেখায়নি। যদিও এ নিয়ে আন এডেড মাদ্রাসার শিক্ষকরা আন্দোলনে খামতি দিচ্ছেন না। তবে তাদের এই আন্দোলনে বল যোগাচ্ছে একটি জনস্বার্থ মামলা। ২৩৪ টি সরকার অনুমোদিত আন্ এডেড মাদ্রাসাগুলিতে অনুদানের জন্যে কলকাতা হাইকোটের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই জনস্বার্থ মামলা করেন মুর্শিদাবাদের লালগোলার বাসিন্দা ৬৫ বছর বয়স্ক মাইনুদ্দিন আহমেদ। গত ৪ জানুয়ারি সেই মামলার প্রথম শুনানি হয় এবং দ্বিতীয় শুনানিতে ১১ জানুয়ারি মহামান্য প্রধান বিচারপতি আন এডেড মাদ্রাসার সাহায্যের জন্য সংখ্যালঘু দফতরের প্রদান সচিবের রিপোর্ট তলব করেন। কিন্তু গত ২৫ জানুয়ারিতে হওয়া শুনানিতেও কোন রিপোট পেশ করা হয়নি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।উল্টে সরকারি আইনজীবী বিচারপতির কাছে আরো দু সপ্তাহ সময়ের জন্যে আবেদন জানান। সেই আবদেনের ভিত্তিতে ডিভিশন বেঞ্চ দু সপ্তাহ সময় দেয় এবং আগামী ৮ ফেব্রুয়ারিতে শুনানির দিন রিপোট দেওয়ার কথা বলা হয়।
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ আন্ এডেড মাদ্রাসা বাঁচাও কমিটির রাজ্য সম্পাদক আব্দুল ওহাব মোল্লা বলেন, তাদের আমা রাজ্য সরকার শুনানির সময় আশার বাণী শোনাবে। সামনে লোকসভা নির্বাচন। রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আন এডেড মাদ্রাসাগুলিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে বলে আশা। মাদ্রাসা শিক্ষা শুধু নয়, সংখ্যালঘু সমাজের শিক্ষার উন্নয়ের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক পদক্ষেপের দিকেই তাই তাকিয়ে রয়েছেন আ্ন এডেড মাদ্রাসার শিক্ষক-অভিভাবকবৃন্দ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct