প্রিমকার উদ্দেশ্যে প্রেমপত্র পাঠিয়েছিলেন ১৯৪৫ সালে৷ সে চিঠি এল ৭২ বছর পর৷ ঘটনাটি এ সপ্তাহের। নিউজার্সির ওয়েস্টফিল্ড। বাসার সংস্কারকাজ করছিলেন অ্যালেন কুক ও তার মেয়ে মেলিসা।
একপর্যায়ে তারা ছাদের এক ফাঁকে ফাটলের মতো দেখতে পান। সেখানে গোঁজা আছে একটি খাম। আর এ খামের ভেতরেই ‘লুকিয়ে’ ছিল হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার এক কাহিনী!
অ্যালেন কুক বলেন, ‘খামটি ছিল অনেক পুরনো আর হলুদ রঙের। দেখে বোঝা যায়, এটা কখনও খোলা হয়নি। আমার জামাই যখন এটা পড়া শুরু করলেন, তখন অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। চিঠির প্রেরক তারড়ু স্বামীকে অনাগত সন্তানের বিষয়ে লেখেন। এ কাহিনী ১৯৪৫ সালের। এটা নিয়ে হতে পারত গভীর ভালোবাসার সিনেমার কাহিনী।’ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৪৫ সালের ৪ মে চিঠিটি ভার্জিনিয়া নামে এক নারী তার স্বামী রফ ক্রিস্টোফারসেনকে লেখেন। এটা টাইপ করা। ঘটনার সময় রফ ছিলেন নরওয়ের নৌবাহিনীর নাবিক। খামটির ওপর লেখা, বিলি না হলে প্রেরকের কাছে ফেরত পাঠান। চিঠিটি পেয়ে অ্যালেনের মেয়ে মেলিসা ইন্টারনেটে খুঁজতে থাকেন রফ ক্রিস্টোফারসেন নামের কাউকে। খুঁজতে থাকেন তার ফোন নম্বর। একপর্যায়ে পেয়ে যান। ফোন ধরেন রফের ছেলে। রফের ৬৬ বছর বয়সী ছেলে থাকেন ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারায়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তখন অফিসে ছিলাম। কেউ একজন আমাকে ফোন করলেন। তিনি আমার নাম নিয়ে এক রকম গোলক ধাঁধায় পড়লেন। কারণ, আমার বাবার নাম আর আমার নাম একই। মেলিসা আমার কাছে জানতে চাইলেন, আমি কোথায় বড় হয়েছি। আমি তাকে বললাম। এসব শুনে তিনি আমাকে চিঠির বিষয়টি বললেন। এভাবেই সবকিছু খোলাসা হল।’
মা ভার্জিনিয়া যখন চিঠিটি লেখেন, তখন জন্ম হয়নি তার ছেলে রফ ক্রিস্টোফারসেনের। তা সত্ত্বেও তাকে নিয়ে তার মা যেসব কথা লিখে গেছেন, তা তার কাছে অত্যন্ত স্পেশাল- বলেন ছেলে রফ। ছয় বছর আগে তার মা মারা গেছেন। ওই চিঠিতে ভার্জিনিয়া লেখেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি রফ, যেমনটি আমি ভালোবাসি সূর্যের উত্তাপ। আমার জীবনে তোমার অর্থ এমনটাই। সূর্যইতো সব কিছুর নেপথ্যে। তার জন্যইতো আমি আবর্তিত হই।’
সবচেয়ে আনন্দের কথা হল, এখনও ভার্জিনিয়ার স্বামী রফ ক্রিস্টোফারসেন বেঁচে আছেন। ছেলে রফ চিঠিটি হাতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তার বাবাকে ফোন করেন। তার বাবার বয়স এখন ৯৬ বছর। তিনি বাস করেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। তাকে ছেলে চিঠি পড়ে শোনান ফোনেই। ৭২ বছর পর স্ত্রীর লেখা প্রেমপত্র পেয়ে তার বুকটা প্রসারিত হয়ে ওঠে। আবেগে কাঁদেন তিনি। চিঠিতে তিনি খুঁজে পান স্ত্রীর উষ্ণ ভালোবাসা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct