পদত্যাগ করলেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ মাহমুদ মাদানি। প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ ও জমিয়তের জনপ্রিয় এই নেতার পদত্যাগে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে্ কারণ, জমিয়াতে উলামায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক পদে বিরোধ রয়েছে তাঁর কাকা মাওলানা আরশাদ মাদানরি সঙ্গে। তাই বর্তমানে জমিয়তে উলামার মধ্যে দুটি গোষ্ঠী হয়ে গেছে একটি মাওলানা মাহমুদ মাদনির ও অপরটি মাওলানা আরশাদ মাদানির। তবে, বেশ কিছুদিন দরে দুই গোষ্ঠী মিলে যাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। সেই কারণে মাওলানা মাদানির পদত্যাগ কিনা তা অব্যশ জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, মাওলানা মাহমুদ মাদানির বাবা মরহুম মাওলানা সৈয়দ আসাদ মাদানি ছিলেন জমিয়তে ইলামার সর্বভারতীয় সম্পাদক। তিনি দীর্ঘদিন কংগ্রেস সাংসদও ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর মাওলানা মাহমুদ মাদানিই জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক হন। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকে দেশে সংখ্যালঘুদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় এই সংগঠনের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এমনকি জমিয়তের কেন্দ্রীয় অফিস দখল নিয়ে মামলাও হয়। পরে দুটি গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে গিয়ে একটির সম্পাদক হন মাওলানা মাহমুদ মাদানি। সভাপতি হন দারুল উলুম দেওবন্দের অধ্যাপক ক্বারী মুহাম্মদ উসমান। অন্যদিকে, অপর গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক হন মাওলানা আরশাদ মাদানি। মাওলানা আরমাদ মাদানির মহারাষ্ট্র সহ কয়েকটি রাজ্যে বেশ প্রভাব রযেছে আলেমদের মধ্যে। অন্যদিকে মাহমুদ মাদনির প্রভাব আরও বেশি রাজ্যে। এমনখী দেশের রাজনৈতিক মহলেও মাহমুদ মাদানির বেশ প্রভাব রয়েছে। কিন্তু দুই গোষ্ঠীর বিবাদের ফলে তিতিবিরক্ত হযে উঠছিল আলেম সমাজ। তার জন্য তাদের মধ্যে থেকে দাবি উঠছিল দুই গোষ্ঠী যাতে মিলে যায়। এই মর্মে দিল্লিতে একটি সভাও হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কেন মাহমুদ মাদানি কেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, এতদিন মাহমুদ মাদানি রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। সামনে লোকসভার নির্বাচনে তিনি হয়তো কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে পারেন্।
শোনা যাচ্ছে, মাওলানা মাদানি তার বাবার পথ অনুসরণ করে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। বিহারের কিষাণগঞ্জের খংগ্রেস সাংসদ মাওলানা আসরারুল হক কাসেমি মারা যাওয়অর পর সেটি শূন্য রয়েছে। লোকসভার আগে সেখানে উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। সূত্রের খবর, কংগ্রেস সেখানে একজন মাওলানা বা আলেমকে দাঁড় করাতে চায। আর সেজন্য প্রথম পছস্দ মাহমুদ মাদানি। এছাড়া ওই এলাকায় জশিয়তে উলামার ব্যাপক প্রভাবও রয়েছে। আর কংগ্রেস জোট সঙ্গী লালুর আরজেডির সঙ্গেও সম্পকৃ ভাল মাহমুদ মাদানির। তাই একদিকে দুই জমিয়তের গোষ্ঠী মিলে এক হওয়া ও অন্যদিনে ভোটে দাঁড়ানো দুটির সম্ভাবনাকে উজ্জ্বল করে তুলেছে মাওলানা মাদানির এই পদত্যাগ। তিনি যেভাবে কয়েকটি লাইন লিখে কোনও কারণ না দেখিয়ে পদত্যাগপত্র লিখেছেন, তাতে সেই জল্পনা জোরদার হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct