রাজ্যের আন এডেড মাদ্রাসায় শিক্ষকদের বেতনসহ অন্যান্য সহায়তা মিলছে না এই অভিযোগে গত ১২ নভেম্বর থেকে জোরদার আন্দোলনে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ আন এডেড মাদ্রাসা বাঁচাও কমিটি। কোচবিহার থেকে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর তা এবার পৌঁছে গেছে মুর্শিদাবাদে। সোমবার বহরমপুরে বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা শাসকের কাছে ডেপুটেশন দিল আন্-এডেড্ মাদ্রাসা বাঁচাও কমিটি। তার আগে আন্ এডেড মাদ্রাসা শিক্ষকরা বহরমপুরের স্কোয়ার ফিল্ডের মাঠে জমায়েত হন। প্রায় ৭০০ শিক্ষক সেখান থকে মিছিল করে লালদিঘির ধার ধরে জাতীয় সড়কের গীরজার মোড়ে যান। তারপর বিভিন্ন দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। এর ফলে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে।
তবে, আন্-এডেড্ মাদ্রাসা বাঁচাও কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলা সভাপতি মোঃ সাহাবুদ্দীন সেখ ও জেলা সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক পি উলগানাথনের সঙ্গে দেখা করে দাবি সম্বলিত এক স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। স্মারকলিপি পাওয়ার পর জেলাশাসক বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আন্-এডেড্ মাদ্রাসা বাঁচাও কমিটির জেলা সভাপতি মোঃ সাহাবুদ্দীন সেখ সাংবাদিকদের বলেন, এই জেলার ৪৮ টি আন্-এডেড্ মাদ্রাসা অনুমোদন দিয়েছে রাজ্যের মা-মাটি-মানুষের জননেত্রী মমতা ব্যানার্জির সরকার। কিন্তু আজও এক পয়সা অনুদান মেলেনি।
কমিটির জেলা সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, মুর্শিদাবাদ জেলা শুধু সংখ্যালঘু জেলা হিসেবেই পরিচিত নয়, এই জেলা দেশের মধ্যে আর্থিক এবং বুনিয়াদী শিক্ষার দিক থেকে দেশের সমস্ত জেলার মধ্যে পিছিয়ে পড়া । আমরা চাই আমাদের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের মাদ্রাসা গুলির প্রতি নজর দিন এবং মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বুনিয়াদী মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি সহৃদয়তা দেখান। দীর্ঘ দিন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে সরকারি আর্থিক সহায়তা না হওয়ার কারণে মাদ্রাসা গুলি উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে ।
এ ব্যাপারে আন্-এডেড্ মাদ্রাসা বাঁচাও কমিটির রাজ্য সম্পাদক আব্দুল ওহাব মোল্লার অভিযোগ, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পঃবঃ আন এডেড মাদ্রাসার শিক্ষকের বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু গুটি কয়েক মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার পর তা থমকে রয়েছে। তাই চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে আন এডেড মাদ্রাসাগুলো। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে মমতা ব্যানাজী ১০০০০ আন এডেড মাদ্রাসা দেওয়ার কথা বলেছিলেন মহাকরনে সাংবাদিক সম্মেলন করে। ২০১৩ সালের ৮ ই ফ্রেব্রুয়ারী মাইনোরিটি ও মাদ্রাসা দফতরের জয়েন্ট সেক্রেটারি পি বি সালিম সাহেব সাহেব একটা অর্ডার দিয়েছিলেন প্রত্যেক জেলার জেলাশাসককে। সেই অর্ডারে বলা ছিল অনুমোদিত আন এডেড মাদ্রাসাগুলিকে সরকারী সমস্ত সাহায্য ও সহোযোগিতা করবে দফতর। এখন পর্যন্ত মাত্রা ২৩৪ টি আন এডেড মাদ্রাসা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং পিবি সালিম সাহেবের অর্ডারটি আজও বাস্তবায়িত ও কার্যকর হয়নি। এর ফলে মাদ্রাসাগুলি একেবারে ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে বলে অভিযোগ ওহাবের। তার আরো অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের SPQEM এর স্কীম থেকে ২০১৩ -১৪ সালে একবার মাএ আন এডেড মাদ্রাসার শিক্ষকরা বেতন পেয়েছিল। তারপর থেকে রাজ্য সরকার দিল্লীতে U.C সাটিফিকেট না দেওয়ার ফলে কেন্দ্রীয় স্কীম থেকে বঞ্চিত আন এডেড মাদ্রাসা
আবদুল ওহাব আরও বলেন, আন্-এডেড্ মাদ্রাসা গুলির অনুদানের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত রাজ্যের প্রতিটি জেলায় এই আন্দোলন ও ডেপুটেশনের কর্মসূচি চলবে এবং রাজ্যের সমস্ত জেলা গুলির ডেপুটেশন কর্মসূচি শেষ হয়ে গেলেই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct