চলে গেলেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক আবদূর রাকিব। বুধবার সকালে বাড়িতে শৌচাগারের মধ্যে পড়ে যান। তারপর হৃদরোগে আক্রান্ত হন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু কথাসাহিত্যিক জীবনানন্দ দাশের মৃত্যকে উস্কে দিয়েছে। কলকাতায় জীবনানন্দ দাশের মৃত্যু হয়েছিল ট্রামে কাটা পড়ে। আর কথাসাহিত্যিক আবদুর রাকিবের মর্মান্তিক মৃত্যু হল শৌচাগারে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনায়। আবদুর রাকিবের এই মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্য মহলে। আজ বিকালে আসর নামাজের পর তার নামাজ এ জানাজা ও দাফন হবে।
স্বাধীনতা পরবর্তীতে যে কজন মুসলিম কথা সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্যে অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম আবদূর রাকিব। ১৯৩৯ সালে বীরভূমের মুরারাই থানার এদরাকপুর গ্রামে জন্ম।
ছাত্রাবস্থায় ১৯৫৮ সালে কলেজ ম্যাগাজিন থেকেই লিখে আসছেন। কলেজ ম্যাগাজিনে 'শরৎচন্দ্র' কবিতা লেখার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। প্রথম গল্প 'মংলা'। তবে একটি মাসিক পত্রিকায় ১৯৬০ সালে হিন্দু নামে 'শুকনো পাঁপড়ি'গল্প লিখে সাড়া ফেলে দেন।
পেশায় শিক্ষক হলেও সাহিত্য রচনাই ছিল তার নিবেদিত প্রাণ। শিক্ষকতা করতে করতেই মুর্শিদাবাদের চারন কবি গুমানি দেওয়ানের সান্নিধ্য লাভ করেন। তার কবিতা সংগ্রহ করে ১৯৬৮ সালে প্রথম লেখেন 'চারণ কবি গুমানি দেওয়ান'। আব্দুল আজিজ আল আমানের হরফ প্রকাশনী থেকে কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ায় সুখ্যাতি ছাড়িয়ে পড়ে। পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে ২০০১ সালে বইটি পুনঃপ্রকাশিত হয়।
তিনি আব্দুল আজিজ আল আমান সম্পদিত কাফেলা পত্রিকার ছিলেন অন্যতম লেখক ও সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য। কাফেলা ছাড়াও কলম, নতুন গতি, মিযান, মাসিক আপনজন পত্রিকায় বহু লেখা লিখেছেন। লিখেছেন দেশ পত্রিকায়।
তিনি কবিতা, গল্প, উপন্যাস লেখার পাশাপাশি বহু গ্রন্থের অনুবাদ করেছেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য তাকে নতুন গতি পুরস্কারও ভূষিত করা হয়। আবদূর রাকিব চলে যাওয়ায় বাংলার সাহিত্য জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct