নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এনজেডসিপিএ) সদস্যদের জন্য নির্ধারিত প্রোগ্রামের হ্যান্ডবুকে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিগত আচরণের উন্নয়ন আর সহনশীল 'যৌন সম্মতি' বিষয়ক অধ্যায় যুক্ত করেছে।
গত সাত বছর ধরেই এই প্রোগ্রাম চলে আসছে, যার অংশ হিসেবে সংযুক্ত আছে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়, যেমন মাদক বিরোধী কার্যক্রম, পেশাদার ক্রিকেট জীবনের পরের বিভিন্ন বিষয় এবং সর্বশেষ যৌন সম্মতি।
এই বছরের আগে যৌন আচরণ বিষয়ক গাইডলাইন হ্যান্ডবুকে যুক্ত ছিল না। এনজেডসিপিএ’র প্রধান নির্বাহী হিথ মিলস বলেন, বিষয়টি সংযুক্ত করার উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা পুরো দেশের ক্রিকেটারদের জন্য সহজলভ্য করে তোলা।
একজন পেশাদার ক্রিকেটারকে অনেক কিছু চিন্তা করে পদক্ষেপ নিতে হয়। কারণ তার গতিবিধি অনুসরণ করেন তার অনুসারী বা ভক্তরা। তারা সমাজ ও দেশের সম্পদ। তাই মাঠে ও মাঠের বাইরের জীবন নিয়ে বিভিন্ন গাইডলাইন সন্নিবেশিত এই হ্যান্ডবুক তৈরি করেছে সংস্থাটি। এটি মূলত তরুণ খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন মিলস।
যৌন সম্মতি বিষয়টিকে গাইডলাইনে সংযুক্ত করায় এনজেডসিপিএ এখন সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশংসিত হচ্ছে। মূলত এই ইস্যুটি এত আলোচিত হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে সম্প্রতি ঝড় তোলা #মিটু আন্দোলন।
#মিটু এখন সারা বিশ্বে যৌন হেনস্তার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধের ভাষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক নামী-দামী তারকা থেকে শুরু করে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্রেট কাভানাও যৌন হেনস্তাকারী হিসেবে অভিযুক্ত হয়েছেন। অনেকের মুখোশ খুলে গেছে। এখনও সেই প্রক্রিয়া চলমান।
#মিটু আন্দোলন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে নারী-পুরুষের আচরণগত ত্রুটি আসলে কতটা কদর্য রূপ ধারন করতে পারে। কারও সম্মতি ছাড়া যৌন আচরণ যে অন্যায় এটা জেনেও যারা এই অন্যায় করে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সারা বিশ্ব।
এই সমস্যা থেকে মুক্ত নয় ক্রীড়াঙ্গনও। জুভেন্টাসের পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক নারী। ২০০৯ সালে লাস ভেগাসের এক হোটেল রুমে এই নারীকে ধর্ষণ করেছেন রোনালদো, দাবী ওই নারীর। তিনি এতদিন চুপ থাকলেও #মিটু’র প্রভাবে জার্মান পত্রিকা দের স্পিগালে মুখ খুলেছেন।
এনজেডসিপিএ’র ওই হ্যান্ডবুকে যৌন সম্মতি নিয়ে একটি অধ্যায় সংযুক্ত করা হয়েছে, তাতে লেখা, ‘পরস্থিতি যেমনই হোক না কেন, যৌন সম্মতি জরুরী। মনে রাখবেন, ভালো সম্মতিই হচ্ছে ভালো যোগাযোগ।‘
‘আপনি যদি কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে চান, তাহলে আপনাকে তার কাছ থেকে আইন অনুযায়ী প্রতিবার সম্মতি নিতে হবে।’
‘আর এই সম্মতি হতে হবে জেনে-শুনে, তার মানে আপনাকে পরিস্তিতি সম্পর্কে সৎ হতে হবে। এবং সম্মতি হতে হবে বিনা চাপে। এমনটা হলে বুঝতে হবে তারা হ্যা বলছে। এই কারণে নয় যে তারা হয়তো নেশাগ্রস্ত, কিংবা খুব ভয় পেয়ে, কিংবা তারা আপনাকে হেনস্থা করা থেকে থামাতে থামাতে চাইছে।’
‘যার সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন তার প্রতি অবশ্যই সম্মান বজায় রাখতে হবে।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct