প্রতিটি মানব শরীরের কোষের মধ্যে একটি হত্যার সংকেত থাকে, যা তাঁর নিজেকে ধ্বংস করে দেওয়ার কারণ হতে পারে। আমেরিকার ইলিনয় রাজ্যের নর্থ ওয়েস্টান ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এটি আবিষ্কার করেছেন। তাঁদের বিশ্বাস, এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে ক্যান্সার প্রতিকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। বিশেষ করে, কোনো রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ না করিয়ে রোগাক্রান্ত কোষগুলোকে 'আত্মহত্যায়' প্ররোচিত করা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় সাফল্য এল ক্যান্সার নিরাময়ে কেমোথেরাপির মতো কষ্টকর অভিজ্ঞতা থেকে বাঁচা সম্ভব হবে।
বর্তমানে কোষের ভেতরের নিরাপত্তারক্ষী যখন বুঝতে পারে এর মধ্যে ক্যান্সার হয়েছে তখনই এটি 'হত্যার সংকেত'কে সক্রিয় করে নিজেকে ধ্বংস করার জন্য। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৮০০ মিলিয়ন বছর আগে রোগের হাত থেকে শরীরকে রক্ষার জন্য। তবে কোষগুলো সবসময় সফল হতে পারে না, বিশেষ করে শক্তিশালী টিউমারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে জিততে পারে না তারা। তবে এই সব কোষ আরও শক্তিশালী হতে পারে যদি তার সংখ্যা কৃত্রিমভাবে বাড়ানো যায়। এই সব কোষের কারণে রোগীকে কেমোথেরাপির পাশর্পিপ্রতিক্রিয়ার মতো যন্ত্রণা আর ভোগ করতে হবে না।
নর্থওয়েস্টান ইউনিভার্সিটি ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিন এর ক্যান্সার মেটাবলিজম এর অধ্যাপক মারকুজ ই. পিটার ও টমাস ডি. স্পাইস বলেন, 'এখন আমরা জানি কেমোথেরাপি ও কোষের সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছাড়াই 'হত্যার সংকেত' ব্যবহার করে ক্যান্সার নিরাময় প্রক্রিয়ার দিকে যেতে পারি।'এক্ষেত্রে আমরা ক্ষুদ্র আরএনএ সরাসরি ব্যবহার করতে পারি, তাদের আক্রান্ত কোষে রূপান্তর করে এবং হত্যার সংকেতটি চালু করে দিতে পারি। আমাদের লক্ষ্য হল ক্যান্সার নিরাময়ে প্রকৃতিগত উপায় অনুসরণ। এমন একটা প্রক্রিয়া ব্যবহার যা প্রকৃতিগতভাবেই বিন্যাস্ত করে রাখা হয়েছে।