নিজস্ব প্রতিবেদক, মালদা, আপনজন: প্রবল বৃষ্টির ফলে রেললাইনে ধস। মালদা জেলার গৌড় মালদা ও জামিরঘাটা স্টেশনের কাছে শনিবার ধস নামে। প্রবল বৃষ্টির ফলে রেললাইনে ডাউন লাইনে ধস নামে।প্রায় ৩০ মিনিট আটকে যায় বন্দেভারত এক্সপ্রেস।লাইনম্যানের তৎপরতার জন্য বিষয়টি রেল দফতরের নজরে আসে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেল দফতরের কর্তারা। মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে।ধীরগতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।মালদায় রেললাইনে ধস। গৌড় মালদা স্টেশনের কাছে আটকে পড়ে মালদা নবদ্বীপ ট্রেন। এদিকে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবলো মালদা শহর। শহরের একাধিক রাস্তাঘাট জলমগ্ন। জলমগ্ন মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর। অন্যদিকে,গত তিনদিন ধরে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে মালদার রতুয়ার গঙ্গা নদীতে। রতুয়ার বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের খাসমহল এলাকায় ইতিমধ্যে নদিগর্ভে তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং ৫০ বিঘা ফসলি জমি। আতঙ্কে বাড়িঘর ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ফুঁসছে গঙ্গা। জল স্তর বেড়ে যাওয়ায় মরসুমের শুরুতেই ভাঙ্গনে বিপর্যস্ত রতুয়া এলাকার মানুষ।জলপাইগুড়িতে একটানা বৃষ্টি,ফুঁসছে তিস্তা, জলঢাকা, করলা নদী, হলুদ সর্তকতা জারি। মেখলিগঞ্জের জলঢাকা নদী, এনএইচ ৩১ লাল সঙ্কেত । দোমোহনিতে তিস্তায় হলুদ সতর্কতা।জলপাইগুড়িতে শনিবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি।ফুঁসছে তিস্তা, জলঢাকা, করলা নদী ।বাড়ছে জেলার অন্যান্য নদীর জলস্তর। তিস্তা নদী সংলগ্ন ময়নাগুড়ি ব্লকে বেশ কিছু এলাকায় জল ঢুকে জলমগ্ন। চিন্তায় বাসিন্দারা।
জলপাইগুড়ি তিস্তা ব্যারেজ থেকে শনিবার সকালে ২৯৬৯.০২ কিউমেক জল ছাড়া হয়েছে।পাহাড় এবং সমতলে অবিরাম ভারী বৃষ্টির জেরে ফুঁসছে তিস্তা।তিস্তার জল ঢুকে প্লাবিত মালবাজার মহকুমার টটগাঁও গ্রাম। তিস্তা নদী ধীরে ধীরে গ্রাস করছে এই গ্রামকে।বৃষ্টি যত বাড়ছে আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের।স্থানীয়দের কথায় , তিস্তার জল ঢুকে এই এলাকার প্রায় ৫০ এর অধিক বাড়ি জলমগ্ন হয়ে গেছে। তিস্তার হড়পা বানে নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথায় রাস্তা আর কোথায় কৃষি জমি দেখে বোঝার উপায় নেই।গ্রামে ঢোকার রাস্তা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই জলমগ্ন। নষ্ট হয়েছে জমির ফসল।প্রতিবছর বর্ষা এলেই এই এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি বাড়ে। তবে এবছর পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ।
আগে যেদিক দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে যেত, সেখান থেকে ক্রমশ আগ্রাসী হয়ে গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে।
বর্ষার শুরু থেকেই এই এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। তিস্তার ভয়াল রূপ দেখে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। নিজেদের সম্বলটুকু নিয়ে বর্তমানে গ্রামবাসীরা আশ্রয় নিয়েছে ত্রান শিবিরে। গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে টটগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র,গবাদি পশু সহ প্রায় সবকিছু নিয়েই আশ্রয় নিয়েছে অনেক পরিবার। ঘরে উনুন জ্বালানোর পরিস্থিতি নেই, তাই ত্রাণ শিবিরের খাবার খেয়ে খিদে মেটাচ্ছেন সকলে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বহুবার প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও এই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করেনি। বাঁধ থাকলে আজ এই পরিস্থিতি হতো না।
বর্তমানে নদী যেভাবে গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে ভবিষ্যতে এর থেকেও আরো বেশি ভয়ংকর পরিণতি হতে পারে। সমগ্র গ্রামটাই চলে যেতে পারে তিস্তা নদীতে এমনটাই আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা।সেজন্য সকলে চাইছে এই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করুক প্রশাসন।
তবে এখন দেখার গ্রামবাসীদের দাবি মেনে কবে এই এলাকায় তিস্তা নদীর বাঁধ নির্মাণ করা হয় কবে ।টটগাঁও গ্রাম জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায় কবেএখন সেটাই দেখার। এদিকে আবহাওয়া দফতরে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে উত্তরবঙ্গে অতি দুর্যোগ চলবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct