আপনজন ডেস্ক: দেশের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যে ৩২টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে, পশ্চিমবঙ্গের তিন কেন্দ্রের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে। আর এই তিন কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত কেন্দ্র হল কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র।
ভবানীপুর উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা তার মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ‘পয়া’ শুক্রবারকেই বেছে নেন। এদিন জুম্মার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মিছিল ছাড়াই স্বল্প কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে আলিপুর সার্ভে বিল্ডিংয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান।
এমনিতেই নির্বাচন কমিশনের নিষেধ ছিল, তার উপর রাজ্যের করোনা বিধি নিষেধ, তাই অাগেভাগেই মমতা দলীয় সমর্থকদের বলেছিলেন তারা যেন মনোনয়নের সময় ভিড় না জমান। এই প্রথম দলীয় সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছাড়াই মমতাকে মনোনায়ন জমা দিতে যেতে হয়।
এবারের মনোনয়ন জমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ, নন্দীগ্রামে হেরে যাওয়ার পর তিনি বিধায়কহীনভাবেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। তাই আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে তাকে জিতে আসতে হবে। সেজন্য তার পুরনো জমিন ভবানীপুরকেই তিনি বেছে নেন। এই ভবানীপুর কেন্দ্রের প্রতি মমতার রয়েছে একটা বিশেষ আবেগ। ২০১১ সালে প্রথম যখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেনে মমতা তখন তিনি বিধায়ক ছিলেন না। এই ভবানীপুর থেকেই জিতে এসে মুখ্যমন্ত্রীর পদ রক্ষা করেন। এবারেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর মনোনয়নে তার মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও বেশ কয়েকজন প্রস্তাবক ছিলেন। সেই প্রস্তাবকদের মধ্যে ছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর বাবলু সিং ও মীরজ শাহ। এছাড়া অন্য প্রস্তাবকদের মধ্যে ছিলেন চিত্রভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের স্বামী প্রযোজক নিসপাল সিং রানে। তাকে পাশে রেখেই মনোানয় জমা দিতে দেখা যায়। যদিও অন্য প্রস্তাবকদের মধ্যে ছিলেন মমতা ঘনিষ্ঠ ফিরহাদ হাকিমের স্ত্রী ইসমাত হাকিমও। উল্লেখ্য, ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বহু অবাঙালি ভোটার রয়েছেন। তাদের টানতে বিজেপি কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে প্রার্থী করেছে। সে হিসেবে ওই এলাকায় অবাঙালিদের মধ্যে জনপ্রিয় নিসপাল সিং রানে। তাই তাকে প্রস্তাবক করে মমতা কিন্তু বড় চাল দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে উপনির্বাচন হওয়ার কথা। আর ফলাফল ৩অক্টোবর। তবে, মমতাকে উদ্বেগে রাখতে এবার বিজেপি তাদের প্রায় সব শীর্ষ রাজ্য নেতাকে ভবানীপুরে প্রচারে নামাচ্ছে। তবে, এখনও ঠিক হয়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা অমিত শাহ প্রচারে আসবেন কিনা অথবা কবে আসবেন। যদিও গত বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে ডেইলি প্যাসেঞ্জারের মতো এ রাজে নির্বাচনী প্রচারে আসতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তাতে তেমন প্রভাব পড়েনি। এ নিয়ে সর্বভারতীয় মিডিয়ায় মোদির জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বলা হয়, মোদি ম্যাজিক কাজে লাগেনি মমতার ক্যারিশমার কাছে। তাই অনেকটাই হতাশ হন অমিত শাহরা। দিলীপ ঘোষদের দাপাদাপিতে বারে বারে রাজ্যে এসেও তেমন ফল না মেলায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন। এবার তাই ভবানীপুর উপনির্বাচনে মোদি অমিত শাহরা কীভাবে প্রচারে নামেন সেটাই দেখার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct