দেবাশীষ পাল, মালদা, আপনজন: ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি সহ কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সমাবেশ করল মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবার বিকেলে রতুয়া বিধানসভার কাহালা হাই স্কুল মাঠে প্রতিবাদ সভা ও প্রকাশ্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দিন কয়েক আগে রতুয়ার কাহালায় বিজেপির প্রকাশ্য জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই জনসভায় বিজেপি মুখপাত্র সজল ঘোষ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তার মন্তব্যের পরিপেক্ষিতে এদিন রতুয়ার কাহালা হাই স্কুল মাঠে রতুয়া বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে পাল্টা প্রকাশ্য জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন উপস্থিত তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা সিপিএম কংগ্রেস ও বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করেন। রাজ্যজুড়ে নেতাদের মধ্যে যেন কুকথার রাজনীতির প্রতিযোগিতা চলছে। বিতর্কিত মন্তব্য করে শিরোনামে থাকতে চাইছেন নেতা-নেত্রীরা। দেশের মহিলা রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জের শেষ হতে না হতেই এবার প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন তৃণমূল বিধায়িকা সাবিত্রী মিত্র। দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দূর্যোধন ও দুঃসাশন। শুধুমাত্র নারীদের বস্ত্র হরণ করে। গুজরাটের ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কোন অবদান নেই। গুজরাটিরা ব্রিটিশদের অস্ত্র সরবরাহ করেছে। তিনি বিজেপিকে বিড়াল বলে কটাক্ষ করেন। বিজেপি হচ্ছে বিড়ালের দল তারা মাছ চুরি করে খায়। যারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেছেন তাদের দলবদলু বলে কটাক্ষ করেন। রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশী চক্রবর্তী বলেন, সিপিএম সোনিয়া গান্ধীকে ডাইনি বলেছিল, রাজীব গান্ধীকে দালাল বলেছিল। সেই সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী জোট করে তৃণমূলকে পরাস্ত করতে চাইছে। তারা জোট বেঁধে বিজেপিকে সহযোগিতা করছে। এরা বাংলার উন্নয়ন চাই না। তিনি নাম না করে রতুয়ার দাপুটে নেতা শেখ ইয়াসিনের উদ্দেশ্যে বলেন অন্য দল থেকে আসতে গেলে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করতে হবে। তিনি যদি অনুমতি দেন তাহলে দলে কাউকে নেওয়া যাবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি ছাড়া আমারও ক্ষমতা নেই কাউকে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করানোর। দোলে যোগদান করতে গেলে জেলা সভাপতি জেলা চেয়ারম্যানের অনুমতি লাগবে।
এদিন উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী গোলাম রাব্বানী, সেচ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুর রহিম বকসি, মানিকচক ও বৈষ্ণবনগরের বিধায়িকা সাবিত্রী মিত্র ও চন্দনা সরকার, রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য হুমায়ন কবির, রতুয়া-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি অজয় সিনহা, সহ-সভাপতি রাজেশ সিংহ সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে সজল ঘোষের মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে গিয়ে একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করেন তৃণমূল বিধায়িকা সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন মমতা সুর্পণখা হলে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহ এবং বাকি বিজেপি নেতারা দুর্যোধন ও দুঃসাশন। শুধু নারীদের বস্ত্র হরণ করে। বিজেপি বিড়ালের দল। জয় শ্রীরাম বলে রাজনীতি করে। গুজরাটিদের ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কোন অবদান ছিল না। তারা ব্রিটিশদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। সেই গুজরাট থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তার মুখে ভারত মাতা কি জয় শুনবো না। এছাড়াও অন্যান্য তৃণমূল নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। তৃণমূলের উন্নয়নের পক্ষে সওয়াল করেন। কিন্তু সাবিত্রী মিত্রের এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। এদিনের এই প্রকাশ্য সম্মেলনে বিজেপির ২ পঞ্চায়েত সদস্য প্রায় পাঁচ শতাধিক কর্মীকে নিয়ে তৃণমূলে যোগদানের আবেদন জানান। তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বকসি জানান উচ্চ নেতৃত্ব সম্মতি দিলে তাদের যোগদান করানো হবে। মালদা জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বকসি বলেন, আমরা উন্নয়নের রাজনীতি করি। আমরা সজল ঘোষের মন্তব্যের প্রতিবাদ করছি। কিন্তু আমরা ব্যক্তি আক্রমণ কাউকে করিনা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct