নিজস্ব প্রতিবেদক , কলকাতা, আপনজন: দীর্ঘদিনের টানা পড়েন ও অবসান ঘটিয়ে সংখ্যালঘু বিষয়ক মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে প্রথম পর্যায়ে অনুমোদন পেতে চলেছে ৬৮০টি সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান। গত ৬ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত মেমো নম্বর- 3633-MD/O/2M-09/2024(MD-15018/1/2014) অনুয়ায়ী রাজ্যের বিভিন্ন জেলার অনুমোদনহীন মাদ্রাসাগুলো অনুমোদনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষার দপ্তরের সচিবের পক্ষ থেকে। যথারীতি সেই নির্দেশিকা প্রদান করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সচিবকে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অবগত করা হয়েছে রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর আবিদ হোসেনকে।
উল্লেখ্য ২০২৩ সাল পর্যন্ত যে সমস্ত মাদ্রাসা আনঅ্যাডেড হিসেবে অনুমোদনের জন্য সরকারি পর্যায়ে ইন্সপেকশন হয়েছিল তার তালিকার পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে তিন দফায় আরো বেশ কিছু মাদ্রাসা পরিদর্শনের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তার পক্ষ থেকে ৭ই মার্চ ২০২৪ তারিখে মেমো নম্বর-305-ME -তে ১৩১-টি,১২-ই মার্চ ২০২৪ এর মেমো নম্বর-326-ME অনুযায়ী ৫৮-টি এবং ১৫-ই মার্চ ২০২৪ এর মেমো নম্বর -349-ME- তে ১০৩ টি, মোট তিন দফায় মাদ্রাসা-২৯২টি মাদ্রাসা পরিদর্শনের জন্য ডাইরেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশন বিভিন্ন জেলার সংখ্যালঘু বিষয়ক আধিকারিকদের নিকট নির্দেশিকা প্রকাশ করেন ।
কিন্তু ঠিক তার কয়েকদিন পরই লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার কারণে মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট (MCC) চালু হয়ে যায়, যার কারণে প্রায় চার মাস প্রশাসনিক পর্যায়ে ওই সমস্ত মাদ্রাসার পরিদর্শন বন্ধ রাখতে হয়, তারপর জেলা আধিকারিক এর নির্দেশিকা অনুযায়ী রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে নির্দেশ পাঠানো হয় আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের ভেরিফিকেশনের জন্য। কিন্তু, নির্বাচন পরবর্তী প্রায় এক মাস যাবত বেশিরভাগ ব্লকের আধিকারিকগণ সেই নির্দেশিকা পালনের যথাযথ ভূমিকা পালন না করায় যথাসময়ে জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরে এবং জেলা সংখ্যালঘু দপ্তর মারফত ডাইরেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশন এর দপ্তরে ভেরিফিকেশন রিপোর্ট জমা করতে দেরি হয়। এ বিষয়ে বিভিন্ন জেলার সংখ্যালঘু অধিকর্তার পক্ষ থেকে একাধিকবার বিভিন্ন ব্লকে রিমাইন্ডার লেটার প্রদান করা হয় । যদিও ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীর পর্যায়ে শুরু হয়েছিল বলে দাবি করেন অনুমোদন প্রার্থী বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ, শিক্ষা দরদী সাধারণ মানুষ, অবিভাবক বৃন্দ থেকে কর্মরত শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীবৃন্দ। তাদের বক্তব্য নির্বাচনের জন্য প্রায় চার মাস সময় কাজ বন্ধ ছিল , তারপরে ভেরিফিকেশনের কাজ শুরু হলেও তার গতি ছিল অত্যন্ত ধীর এবং তারপরেই শুরু হল বাঙালির সার্বজনীন দুর্গোৎসব। যার কারণে সমস্ত অফিসিয়াল কাজ প্রায় ১-মাস বন্ধ থাকায় তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও বহু প্রতিষ্ঠান এখনো ভেরিফিকেশন করা হয়নি, বিশেষ করে রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ, মালদা ,উত্তর দিনাজপুর ,দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বৃহত্তর সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের নাম ভেরিফিকেশন তালিকায় থাকা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত ভেরিফিকেশন হয়নি। আর যতগুলো মাদ্রাসা ভেরিফিকেশন হয়েছে তাদের অনেকের ভেরিফিকেশন রিপোর্ট হয় ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসে জমা পড়ে আছে অন্যথায় জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরে জমা পড়ে আছে।
অবশ্য প্রতিটা জেলা থেকেই ভেরিফিকেশন করা কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম রিপোর্টসহ ডাইরেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশনের দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল । এমতাবস্থায় তাদের দাবি যথা শীঘ্রই বাকি থাকা তালিকাভুক্ত মাদ্রাসাগুলিকে ভেরিফিকেশন করে এবং ভেরিফিকেশন হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের মাধ্যমে ডাইরেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশন এর দপ্তরে পাঠানো উচিত বলে তারা মনে করছেন। এ বিষয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল এম,এস,কে-স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি ফিরোজ উদ্দিন বলেন, রাজ্য সরকারের ইতিবাচক ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct