সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি বা এই মেলার জন্য কেন্দ্র সরকার কেন এক পয়সাও খরচ করে না তা নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারেও গঙ্গাসাগরের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই একই প্রশ্ন বেশ ক্ষোভের সঙ্গেই তিনি ছুড়ে দিয়েছেন মোদি সরকারের দিকে। উত্তর অবশ্য আসেনি। সেই উত্তর যে চট করে আসবে এমন প্রত্যাশা বাংলার কোনও মানুষই করেন না। তবে এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় আগত তীর্থযাত্রী থেকে দর্শনার্থী মায় পর্যটকদের জন্যও বড়সড় পদক্ষেপ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কলকাতা থেকে মাথাপিছু মাত্র ১০০ টাকাতেই চলে যাওয়া যাবে গঙ্গাসাগর মেলাতে। একই পরিমাণ টাকা খরচ করে ফেরত আসা যাবে কলকাতাতে। এর জন্য অবশ্য কাটতে হবে রাজ্য সরকারের পরিবহণ দফতরের বিশেষ একটি টিকিট। সেই এক টিকিটেই কলকাতা থেকে যাওয়া যাবে গঙ্গাসাগর, আবার ওই টিকিটেই গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতা চলে আসা যাবে। এতে লাভ, এক তো কলকাতা থেকে গঙ্গাসাগর যেতে টিকিটের জন্য বারবার বাস বা ভেসেলের লাইনে দাঁড়াতে হবে না তীর্থযাত্রীদের। মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা মতো রাজ্যের পরিবহণ দফতর ‘এক টিকিটেই গঙ্গাসাগর’ যাওয়ার ব্যবস্থা করছে।
একবার টিকিট কাটলেই হাওড়া এবং বাবুঘাট থেকে পৌঁছে যাওয়া যাবে সাগরদ্বীপে কপিলমুনির আশ্রম প্রাঙ্গণে। ওই টিকিটে চড়া যাবে বাসে, ফেরিতেও। এবার আসা যাক কীভাবে এই ১০০ টাকায় কলকাতা থেকে কপিলমুনি আশ্রম প্রাঙ্গণে যাওয়া যাবে বা সেখান থেকে ফেরত আসা যাবে সেই প্রসঙ্গে। বাবুঘাট থেকে বাসে সড়ক পথে নামখানা কিংবা কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট পর্যন্ত যেতে হয় পুণ্যার্থীদের। তার জন্য নেওয়া হচ্ছে মাথাপিছু ১২০টাকা করে। এই ভাড়ায় আসা ও যাওয়ার খরচ ধরা থাকছে। সেই হিসাবে কলকাতা থেকে নামখানা বা কাকদ্বীপের ভাড়া পড়ছে মাথাপিছু ৬০ টাকা করে। আবার নামখানা বা কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট থেকে লট ৮ বা কচুবেড়িয়া পর্যন্ত ফেরিতে যাতায়াতের জন্য নেওয়া হচ্ছে মাথাপিছু ৮০ টাকা করে। এক টিকিটেই আসাযাওয়া দুটিই করা যাবে। অর্থাৎ বাসের জন্য ৬০ টাকা ও ফেরির জন্য ৪০টাকা নেওয়া হচ্ছে পূণ্যার্থী, তীর্থযাত্রী, দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছ থেকে। এই ১০০ টাকার এক টিকিটেই চলে যাওয়া যাবে কলকাতা থেকে গঙ্গাসাগর। আবার ২০০টাকার টিকিটে আসা ও যাওয়া দুটিই করা যাবে।আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে এই পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে। পরিষেবা পাওয়া যাবে ১৭ তারিখ পর্যন্ত। মকর সংক্রান্তির পুণ্যলগ্নে লক্ষ লক্ষ মানুষ পুণ্যস্নান করতে যান। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষের ভোগান্তি কমানোর লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রী এই পরিষেবার চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এই বছর থেকেই যে এই পরিষেবা চালু হচ্ছে তা কিন্তু নয়। গতবছরও কোভিড আবহে এই পরিষেবা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু গতবছর কোভিড নিয়ে ও গঙ্গাসাগর নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। তার জেরে এই পরিষেবাও সীমিত রাখা হয়েছিল। এইবছর কিন্তু কোনও বিধিও থাকছে না পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও সীমা রাখা হচ্ছে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct