সজিবুল ইসলাম, ডোমকল, আপনজন: গত সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের সাতটি নতুন জেলার নাম ঘোষণা করেন তার মধ্যে মুর্শিদাবাদই নাম ঘোষণা করেন, প্রথম ঘোষণা করেন জঙ্গিপুর বহরমপুর মুর্শিদাবাদ আবার কিছুক্ষণ পরে আবারো ঘোষণা করেন মুর্শিদাবাদ বহরমপুর কান্দি। মুর্শিদাবাদের নাম বাদ রেখে জেলা ভাগ গড়াই সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে ঝড় রাজ্য সরকারের এই জেলা ঘোষণা নিয়ে। ঘোষণার পরপরই বহরমপুর সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী ঘোর বিরোধিতা করে বলেন, জেলা ভাগ হোক ভালো কথা উন্নয়নের স্বার্থে কিন্তু জেলার ঐতিহ্যবাহী যে নাম মুর্শিদাবাদ সেই নাম রেখেই জেলা ভাগ করা হোক। আর এই জেলার নাম মুর্শিদাবাদ রাখার জন্য যতটা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।রাজ্যের আরো অনেক জেলা ভাঙ্গা হয়েছে কিন্তু তাদের জেলার নাম রেখেই ভাঙ্গা হয়েছে জেলা ,যেমন পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর চব্বিশ পরগনা সহ একাধিক জেলার নাম করা হয়েছে জেলার নাম রেখে আর মুর্শিদাবাদ জেলার ক্ষেত্রে কেনো সেটা হবে না। একি ভাবে বহরমপুর বিধান সভার বিজেপি বিধায়ক গৌরী শংকর ঘোষ বলেন যে রাজ্যের জেলা ভাগ করে উন্নয়ন এর কিছুই হবে না,শুধু তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের দুর্নীতি কে ধামাচাপা দেওয়ার পরিকল্পনা মাত্র।আর মুর্শিদাবাদ জেলা বাংলা বিহার উড়িষ্যার রাজধানী ছিল দেশ বিদেশে মুর্শিদাবাদ জেলার নাম আছে ,আর সেই নাম টাকে বিলুপ্ত করে দিতে চলেছে।তিনি আরো বলে ইতি মধ্যে কেন্দ্রের প্রধান মন্ত্রী,রাষ্ট্রপ্রতি,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী কেও জানিয়েছি বিষয়টা।জেলা ভাগ হক কিন্তু মুর্শিদাবাদ নাম রেখে। অন্য দিকে অল ইন্ডিয়া ইমাম মুয়াজ্জিন ও সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন সংঘঠনের রাজ্য সভাপতি কারী সফিক কাসেমী ও সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠান। তারা বলেন,
মুর্শিদাবাদ জেলা বিভাজনের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ নাম অবলুপ্ত না করে ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ নাম অপরিবর্তিত রাখার জন্য আবেদন করেছি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ নামটি বিলুপ্ত ও নিশ্চিহ্ন করে জঙ্গিপুর জেলা ও কান্দি জেলা,বহরমপুর জেলা নামকরণের সিদ্ধান্তে আমরা মুর্শিদাবাদ জেলাবাসী সরকারের সাথে সহমত নয়। আমাদের জোরালো দাবি হল , বিগত কালে যেমন বড় জেলাসমূহকে ভেঙ্গে ছোট করার ক্ষেত্রে পূর্ব বর্ধমান - পশ্চিম বর্ধমান , পূর্ব মেদিনীপুর - পশ্চিম মেদিনীপুর , উত্তর চব্বিশ পরগনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা হিসেবে বিভক্ত করেছেন , ঠিক তদ্রুশ আপনি মানবিক হিসেবে ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত মুর্শিদাবাদ নামটি কেও অপরিবর্তিত রেখে পূর্ব মুর্শিদাবাদ - পশ্চিম মুর্শিদাবাদ এই ভাবে নামকরণ করে জেলা বিভক্ত করবেন আশা রাখছি। যাতে করে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও স্মৃতিও বজায় থাকে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমেও সুবিধা হয়। মিম নেতা সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য সরকারের চরম বিরোধিতা করে বলেন যদি সরকার মুর্শিদাবাদ জেলার নাম না থাকে তাহলে মীম কর্মী সমর্থক গণ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন। কংগ্রেস ব্লক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন যে আমরা প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবো তবুও মুরশিদাবাদ নাম কে হারাতে দিবো না।ভাগ হচ্ছে হোক কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলায় নাম রেখে করা হোক।
সিপিআইএমের প্রাক্তন বিধায়ক ইউনুস সরকার বলেন এই সরকারের কোনো উন্নয়ন মূলক কাজ করার ক্ষমতা নেই তাই রাজ্যের তাদের নেতাদের দুর্নীতিকে ধামা চাপা দেওয়ার একটা পরিকল্পনা মাত্র।এই ভাবে মুর্শিদাবাদ জেলায় নামটা কে বাদ দিয়ে জেলা ভাগ মেনে নেওয়া যাবে না। জঙ্গিপুরের তৃণমূলের সাংসদ ও জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান তার সাংসদ প্যাডে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে লিখিত ভাবে জেলা ভাগের বিষয়ে অবগত করেছেন।তিনি লিখেছেন যে জেলা ভাগ হচ্ছে সেটা খুশির খবর কিন্তু জেলা বাসীর ঐতিহ্য তাকে মান্যতা দেওয়ায় জন্য আবেদন করেন তার চিঠিতে। একই ভাবে তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ বহরমপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি শাওনি সিংহ রায় লিখিত ভাবে মুর্শিদাবাদের নাম রেখে জেলা ভাগের কথা জানান সর্বভারতীয় সভানেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি লেখেন, জেলাবাসীর কথা ভেবে জেলার নাম করণ করা হোক। তিনি আরো বলেন, মুর্শিদাবাদ নামটা গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত ও ঐতিহ্য বহন করে আসছে তাই জেলায় নাম উত্তর মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ করা হোক বলে জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct