সম্প্রীতি মোল্লা , কলকাতা, আপনজন : মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে হাওড়ার আমতার নিহত ছাত্র নেতা আনিস খানের রহস্য মৃত্যু নিয়ে মামলার শুনানি চলে।এদিন আদালতে শুনানি পর্বে আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের তদন্তের উপর কীভাবে মানুষ বা পরিবারের ভরসা থাকবে? প্রশ্ন তুললো আদালত । এদিন হাইকোর্টে আনিস মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। রায়দান স্থগিত রেখেছে হাইকোর্ট । রাজ্যের কাছে হাইকোর্ট প্রশ্ন , -' এই মামলায় অভিযোগ একমাত্র পুলিশের বিরুদ্ধে।
এরপরেও কি মনে হয়, পুলিশি তদন্তের ওপর মানুষ বা পরিবারের আস্থা থাকবে'? এদিন আদালতের পর্যবেক্ষণ, -' কোন পদমর্যাদার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, সেটি বড় কথা নয়। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – সেটিই বড় কথা'। উল্লেখ্য, আনিস খান মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন নিহত ছাত্র নেতা কিম খানের বাবা। মামলার শুনানি শেষ হয়েছে এবং আদালত জানিয়েছে পরে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এদিন শুনানি পর্বে বিচারপতি জানান , -' কোনও ষড়যন্ত্র বা চক্রান্তের তত্ত্ব উঠে আসছে কি না? তা দেখতে হবে। কারণ, এখানে মূল অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। একটি থানার মামলায় অন্য থানা যাচ্ছে অভিযান চালাতে, সমগ্র প্রক্রিয়াই ত্রুটিপূর্ণ। একজন অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপারের মেসেজ থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। এরফলে, সেটাও মাথায় রাখতে হবে। কোন পদমর্যাদার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেটা বড় কথা নয়। এখানে, অভিযোগ একমাত্র পুলিশের বিরুদ্ধে। সে তিনি যে পদমর্যাদারই হোন না কেন। এরপরেও কি রাজ্যের মনে হয়, পুলিশি তদন্তের ওপর মানুষ বা পরিবারের আস্থা থাকবে ?' এর প্রতুত্তরে রাজ্য জানায়, -' আনিস খানের বাবা সালেম খান পুলিশের কাছে যে অভিযোগ জমা দিয়েছেন, সেটা তিনি লেখেননি। কেউ লিখে দিয়েছেন, তিনি সই করেছেন। তাঁকে যখন এই অভিযোগপত্র পড়ে শোনানো হয়, তখন তিনি বলেন যে এই অভিযোগের অনেক অংশ তিনি বলেননি। সাক্ষ্য এবং গোপন জবানবন্দিতেও তিনি এই কথা বলেছেন। সত্য উদঘাটনের সব চেষ্টা রাজ্য করছে। সিট গঠন করা হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজ্যের তদন্তকারীদের ওপর অনাস্থার কোনও কারণ নেই'। তবে মামলাকারীর আইনজীবী এদিন এজলাসে জানিয়েছেন , -' আদালত রাজ্যকে তদন্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। রাজ্য সত্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়েছে। তদন্তে কিছুই উঠে আসেনি। কার নির্দেশে এই অভিযান চালানো হয়েছে, সেটা স্পষ্ট করে সিট বলতে পারেনি। কার নির্দেশে ঘটনার রাতে পুলিশ আশপাশের বাড়ির ছাদে উঠে আনিসের বাড়ি ঘিরে ফেলে? কেন ঘেরা হয়েছিল? কোনও উত্তর নেই। মামলাকারীদের প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। পুলিশ জোর করে ঘরে ঢুকে আনিস খানকে হত্যা করেছে। আর রাজ্য এই তত্ত্ব খাড়া করতে চাইছে যে আনিস দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়ে থাকতে পারেন। গ্রামবাসীরা কেউ এই তত্ত্ব মেনে নিতে পারছেন না। আনিস খান আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। সেটাই সত্যি হয়েছে।'মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি পর্ব শেষ হওয়ার পর রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি। খুব তাড়াতাড়ি এই মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct