নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আপনজন: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে লালবাতি গাড়ি বিষয়ক মামলার শুনানি চলে। গাড়িতে লালবাতি - নীলবাতি আলোর ব্যবহার নিয়ে হাইকোর্ট প্রশ্নের মুখে পড়লো রাজ্য সরকার। শাসক দলের নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার নিয়ে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলায় একাধিক প্রশ্নের সম্মুখিন হয়েছে রাজ্য সরকার । এদিন গোটা ইস্যুতে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী সোমবারের মধ্যে রাজ্যের অবস্থান জানাতে হবে ডিভিশন বেঞ্চ কে ।এদিন রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে কলকাতা হাইকোর্ট প্রশ্ন করে, -' রাজ্যজুড়ে লালবাতি, নীলবাতি গাড়ি ব্যবহার হবে কেন? বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের গাড়ি চোখে পড়ে। সব কি বৈধ?' এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে আদালত । এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি এজলাসে মামলার শুনানি পর্বে বলেন, -'লালবাতি ব্যবহারে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯ অনুযায়ী মামলা রুজু করে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা। তাহলে কত মামলা হয়েছে রাজ্যে?' পাশাপাশি বিচারপতির আরও প্রশ্ন, -'রাজ্যে মাল্টি কালার বাতি'র প্রচলন আছে কি? মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ এইসব প্রশ্ন করেই রাজ্যের কাছে উত্তর চেয়েছে।
আদালত সুত্রে প্রকাশ, বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের লালবাতি গাড়ির ব্যবহার নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বিজেপির এক আইনজীবী-নেতা। মামলাকারীর দাবি, -' রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী লালবাতি লাগানো গাড়ি চড়েন না। কোনও মন্ত্রীর গাড়িতেও তেমন লালবাতি নেই। কিন্তু লালবাতির গাড়ি নিয়েই বীরভূমের নানা প্রান্ত ঘুরতেন অনুব্রত মণ্ডল'। নবান্নের কাছে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছে, -' লাল-নীল কত বাতি গাড়ি রয়েছে , কত জনকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তার অপব্যবহারের জন্যও কি কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার? অনুব্রত কেন লালবাতি ব্যবহার করতেন? তা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল হাইকোর্টে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতেই রাজ্য সরকার প্রশ্নের মুখে পড়ে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন রাজ্য কে , -' রাজ্যজুড়ে লালবাতি, নীলবাতির গাড়ি যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে কেন? সবই কি বৈধ?' প্রধান বিচারপতি এদিন শুনানির সময়ে বলেন, -' লালবাতির অপব্যবহার হলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯ ধারা অনুযায়ী মামলা রুজু করে পদক্ষেপ নেওয়া যায়। এমন কত মামলা হয়েছে রাজ্যে?' তাঁর আরও প্রশ্ন, -'রাজ্যে মাল্টিকালার বাতির প্রচলন রয়েছে কি?' এ ব্যাপারে আগামী সোমবারের মধ্যে জবাব চেয়েছে হাইকোর্ট। তবে নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে,- ' জেলা স্তরের বহু নেতা বিভিন্ন কমিশন বা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে গাড়িতে বিকন লাইট লাগানোর অনুমতি পেয়েছিলেন। অনুব্রতও সে ভাবে অনুমতি পেয়েছিলেন'। অনুব্রত মন্ডল পঞ্চায়েত দপ্তরের উন্নয়ন বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান পদে এই বিকন লাইট একদা ব্যবহার করতেন। তবে যখনই তাঁর গাড়ি নিয়ে হইচই শুরু হয়,তখন অবশ্য তাঁর গাড়িতে আর লালবাতি দেখা যায়নি।এখন তিনি আসানসোল সংশোধনাগারে রয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct