এহসানুল হক, বসিরহাট: সামান্য বৃষ্টি হলেই জল জমবে। বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই এমন আশঙ্কা করেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য গত দু’দিনের বৃষ্টিতে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। তৃণমূল পরিচালিত বসিরহাট পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডে চলতি বর্ষার মরসুমে জল নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা করে, স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে শুরু করে পুরসভার পুরপ্রধান তপন সরকারের কাছে বারে বারে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা এমনি অভিযোগ তাদের। কিন্তু অবস্থা যা ছিল, তাই। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জল জমেছে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আরও ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে বলে আশঙ্কা পুরবাসীর মানুষের।
এলাকা ঘুরে এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বসিরহাট পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে।অভিযোগ, কয়েকটি ওয়ার্ডে আবার ওই নিকাশি নালার সংস্কার করার ক্ষেত্রে নিয়ম নীতি মানা হয়নি। ফলে জল গড়িয়ে যাওয়ার পরিবর্তে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। আবার কোনও কোনও জায়গায় নিকাশি নালা সংস্কার ঠিক মতো হলেও অন্যত্র সমস্যা থাকায় সেখানও জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।
ফলে ২০ নং ওয়ার্ডের ট্যান্টরা এলাকার পুরবাসিন্দারা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। অবস্থা সামাল দিতে সোমবার গোটা দিন সকাল গড়িয়ে দুপুরেও সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের আলোচনা এবং বাসিন্দাদের তদ্বির করতে দেখা গিয়েছে।
২০ নং,১২ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, বাসিন্দা রাকেশ মন্ডল,প্রনব মন্ডল ,রাবিয়া খাতুনদের বাড়ির সামনে এক হাঁটুর বেশি জল জমে রয়েছে। ওই পাড়ার একাধিক বাসিন্দাদের বাড়ির উঠোনেও জলজমে ঘরে ঢুকে যাওয়ার অবস্থা। গত সপ্তাহে কাউন্সিলরকে নিয়ে সরেজমিন গোটা পরিস্থিতি চাক্ষুষও করিয়েছেন তারা। গড়িয়ে জল যাওয়ার উপায় নেই। কারণ, ওই জল আসে পিফা, গোটরা এলাকা থেকে সেই সব জল চাপ দেয় এই দিকে তার জন্য এই অবস্থা।
এদিন এলাকার কাউন্সিলর পরিমল মজুমদার বলেন, আমরা অনেক বছর ধরে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আছি দুই পঞ্চায়েতের জল এইদিক দিয়েই আসে। যার কারণে নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় এই সমস্যা। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি অতি তাড়াতাড়ি একটা বড় ড্রেনের মাধ্যমে জল নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এদিন রাকেশ মন্ডল বলেন বহু বছর ধরেই এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। বহুবার প্রশাসনিক কর্তাদের জানানো হয়েছে এমনকি পুলিশ-প্রশাসন এসেছে কিন্তু কেউ কথা রাখেনি যার জন্য আমাদের এই অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই হাঁটুসমান জল। আমরা চাই অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান হোক। আমরা বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক ডা. সপ্তর্ষী ব্যানার্জীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তিনি অবশ্যই আমাদের দিকে দেখবেন। এদিন বিধায়ক সপ্তর্ষী ব্যানার্জিকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বসিরহাট পৌরসভার এটা পুরানো সমস্যা। আমি এসে আজ এই নিয়ে মহাকুমা শাসক ও ব্লক সমষ্টি আধিকারিক এর সঙ্গে দুইবার বৈঠক করেছি। তিনি বলেন, কাটাখাল থেকে টান্টরা পর্যন্ত বড় ড্রেনের ব্যবস্থা হচ্ছে যাতে এই জলটা সরানোর জন্য। তাড়াতাড়ি আমরা জেসিপি দিয়ে এই কাজ শুরু করব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct