আপনজন ডেস্ক: রাজ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। বুধবার বালুরঘাটের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, এই করোনা পরিস্থিতি মানুষের তৈরি নয়, মোদির তৈরি। মমতার তোপ, ‘ভোট প্রচারের জন্য বারবার বাইরের রাজ্য থেকে লোকজন এসেছে এই রাজ্যে। আর করোনা ছড়িয়ে দিয়ে চলে গেছে।’ রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি জন্য বহিরাগতদেরই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সভা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির নেতারা দিল্লি থেকে এসেছেন। তাঁদের সঙ্গে এসেছেন বাইরের লোকেরা এবং এঁদের মাধ্যমে আরও বেশি করে ছড়িয়েছে ভাইরাস।‘
এদিকে, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িযে গেছে। তাই সাধারণ মানুষ যাতে বিভ্রান্ত না হন তার জন্য নির্বাচনী প্রচারের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আতঙ্কের কারণ নেই। বুধবার আবার একধাপ এগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যে এখনই লকডাউন করারর ব্যাপারে ভাবা হচ্ছে না। কারণ, ইতিমধ্যে লকডাউনে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সাধারণ মানুষের। তবে, করোনা প্রতিরোধে রাজ্যের সবাই যাতে করোনা ভ্যাকসিন পান তার জন্য বিশেষ তহবিল ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্বাচনী প্রচারে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে মালদায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী করোনা ভ্যাকসিন কর্মূচিতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল গড়ার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, রাজ্যজুড়ে ৫ মে থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হবে । এছাড়া এসএসকেএম হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা স্যাটেলাইট কাউন্সেলিং হবে। ১৭ জন চিকিৎসক থাকবেন এই কাউন্সেলিংয়ে।
তবে লকডাউন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনই লকডাউন নয়। লকডাউন হলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। কাজকর্ম বন্ধ করে ঘরে বসে থাকলে হবে না। লকডাউন করে ঘরবন্দি হয়ে থেকে কোনও লাভ নেই। বরং, সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’ এদিন মালদায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সঙ্কটজনক হলে তবেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। মৃদু উপসর্গ থাকলে সেফ হাউসে থাকুন। তিনটি গ্রেড করা হবে। গুরুতরদের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে। অসুস্থদের সেফ হাউসে। কম অসুস্থদের হোম আইসোলেশনে।‘ তাঁর মন্তব্য, ‘আতঙ্কিত না হয়ে মানবিক হন। এবারও করোনা-ঝড় সামলানো যাবে। এবারও ঝড় সামলাব, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।‘ রাজ্যের করোনা পরিকাঠামো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেফ হাউস গুলিকে হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ১১ হাজার বেড রয়েছে। আগামী দু’দিনে আরও ২ হাজার বেড যুক্ত হবে।
হাসপাতালের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘রোগী গেলে অন্য হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কোনও রোগী যেন ফিরে না যায়।‘
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে রাজ্যে ৬৭৯৩ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি। হোম আইসোলেশন ৫১,৫৯৩ জন রয়েছেন। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ৩,৮৮৮ জন। বেসরকারিতে ভর্তি ২,৯০৫ জন। ৮০টি হাসপাতালে ৭ হাজারের বেশি অক্সিজেন বেড রয়েছে। ৭০টি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে।
এদিকে, রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ১০ হাজার ছুঁইছুঁই। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের একবার কাঠগড়ায় দাঁড় করান দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct