সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: দেড় বছরের শিশুর শ্বাসনালীতে আটকে থাকা দারুচিনি অস্ত্রোপচারে উদ্ধার করল এসএসকেএম হাসপাতাল: শ্বাসকষ্টে ছটফট করছিল বাচ্চাটা। প্রথমটা বোঝা যায়নি কী হয়েছে। শিশুটিকে নিয়ে এসকেএম হাসপাতালে আসার পরে ডাক্তারবাবুরা পরীক্ষা করে দেখেন শ্বাসনালীতে আটকে রয়েছে দারুচিনির একটা টুকরো। প্রায় সাতদিন ধরে সেটা শ্বাসযন্ত্রেই ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।সফল অস্ত্রোপচারে বের করে এনে শিশুটির প্রাণ বাঁচাল এসএসকেএম হাসপাতাল। দেড় বছরের শিশুটির শ্বাসনালীতে আটকে গিয়েছিল দারুচিনির একটা বড় টুকরো। শ্বাসের সমস্যা শুরু হয়েছিল বাচ্চাটির। হাত-পা ক্রমেই ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল। বহরমপুর হাসপাতাল, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ঘুরে শিশুকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার এনআরএসে। সেখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে যখন নিয়ে আসা হয় বাচ্চাটিকে তখন তার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক।
চিকিৎসকেরা জানতে পারেন সাতদিন ধরে শ্বাসযন্ত্রে আটকে ছিল দারুচিনি। আর বেশি দেরি হলে বিপদ হতে পারত। অস্ত্রোপচার করে সেটি বের করে এনেছেন ডাক্তাররা। বাচ্চাটির শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। এর আগে ফুসফুসে বাঁশি আটকে গিয়েছিল এক কিশোরের। দীর্ঘ দশ মাস ধরে ফুসফুসের ডান দিকে আটকে ছিল প্লাস্টিকের বাঁশি। সংক্রমণ হয়ে একটা ফুসফুস অকেজোও হয়ে পড়ে। মৃতপ্রায় অবস্থায় যখন এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক ছিল কিশোরের। কিন্তু চমত্কার করেন এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিত্সকরা। ব্রঙ্কোস্কোপি করে ফুসফুস থেকে নিরাপদে বের করে আনেন প্লাস্টিকের বাঁশি। প্রাণ বাঁচে ছেলেটির।
ব্রঙ্কোস্কোপি হল এমন একটা পদ্ধতি যেখানে একটি সরু ও ধাতব নল সোজা নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের পথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এই নলকে বলে ব্রঙ্কোস্কোপ। এই ব্রঙ্কোস্কোপ ঢুকিয়ে ডাক্তাররা গলা, ল্যারিংক্স বা স্বরনালী, ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালীর পরীক্ষা করে থাকেন। শ্বাসনালী কোনও ‘ফরেন পার্টিকল’আটকে গেলে বা সংক্রমণ হলে, এই পদ্ধতিতে চিকিত্সা করেন ডাক্তাররা। অনেক সময় বুকের এক্স-রে বা চেস্ট এক্স-রে তে সবটা ধরা পড়ে না। তখন ব্রঙ্কোস্কোপির সাহায্য নেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে শ্বাসনালী বা ফুসফুসে ব্লকেজ থাকলে সেটাও ছাড়ানো যায়। আবার বায়োপসির জন্য কোষ বা মিউকাসের নমুনাও সংগ্রহ করা যায়। এই পদ্ধতিতেই একের পর এক চমৎকার ঘটাচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতাল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct