আপনজন ডেস্ক: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে সন্ত্রাসী হামলায় ইউক্রেনকে নির্দোষ দাবি করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এতটাই মরিয়া হয়ে উঠেছে যে, এ ধরনের আচরণ সন্দেহজনক।শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাশিয়ার দৈনিক ইজভেস্তিয়ায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ এ কথা বলেন।সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইএসআইএস) মস্কোয় হামলার দায় স্বীকার করেছে। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ১৪৩ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। তবে হামলার সঙ্গে সঙ্গেই ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস ঘোষণা করে, আইএসআইএস এ হামলার একমাত্র অপরাধী। তারা কোনোভাবেই কিয়েভের দিকে ইঙ্গিত করেনি।রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্য, পশ্চিমারা সক্রিয়ভাবে সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, এই হামলা আইএসআইএস-এর কাজ এবং কাউকে সন্দেহ করার আর কোনো প্রয়োজন নেই। বিশেষ করে ইউক্রেনকে! তারা জোর দিয়ে বলছে যে কিয়েভকে দোষ দেওয়া যায় না। এমন পর্যায়ে তারা বলছে যে, টি আবেগপ্রবণ হয়ে উঠছে!ল্যাভরভ আরও বলেন, চার সন্দেহভাজন বন্দুকধারী যখন ইউক্রেনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল, তখন রুশ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। আমরা বারবার বলেছি, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারবো না। সত্যতার সঙ্গে তদন্তকাজ এগিয়ে যাচ্ছে, নতুন পরিস্থিতি বের হচ্ছে, তবে সুস্পষ্ট সম্ভাবনাগুলো বাদ দেওয়ার অধিকার আমাদের নেই।
এই হামলার সঙ্গে ইউক্রেনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে সবাইকে বোঝানোর চেষ্টায় পশ্চিমারা সন্দেহজনকভাবে সক্রিয় রয়েছে। শুধু প্রকাশ্যে নয়, তারা আমাদের কূটনৈতিক মিশনের মাধ্যমে যোগাযোগেও বলেছে যে, ‘ইউক্রেনকে সন্দেহ করার দরকার নেই’। কিন্তু তারা কখনই কেনো সন্দেহ করা হবে না- তার ব্যাখ্যা করে না কেন? সুষ্ঠু যুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা ইউক্রেনকে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দিতে পারি না।ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা উভয়ই এর আগে পশ্চিমা জোরাজুরির বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন।রুশ গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জানিয়েছে, সন্দেহভাজনরা হামলার জন্য অর্থ হিসেবে ইউক্রেন থেকে বিপুল পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়েছিল বলে তারা প্রমাণ পেয়েছেন।এদিকে ওয়াশিংটন দাবি করেছে, ৭ মার্চ মস্কোয় আসন্ন হামলার বিষয়ে যে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল, তা সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার শামিল।তবে নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, রাশিয়ার তদন্ত থেকে ‘উৎস ও পদ্ধতি’ আড়াল করতে হামলার বিষয়ে তাদের কাছে থাকা পুরো গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, জনসাধারণের সতর্কবার্তা আমেরিকানদের উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে, ইংরেজিতে- রুশ সরকারকে উদ্দেশ্য করে নয়।তিনি বলেন, আমরা বছরের পর বছর ধরে ইইউকে তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমন্বয় করতে রাজি করানোর চেষ্টা করেছি। আমরা ২০১৮ সালে কিছু সেটআপ করতে পেরেছিলাম, এরপর ২০১৯ সালে এ বিষয়ে ইইউ এর সাথে সভা হয়েছিল। এরপর তারা (ইইউ) সব আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct