আপনজন ডেস্ক: মথুরার শাহী ঈদগাহ-শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি- বিতর্কে সমীক্ষার জন্য আদালত কমিশনার নিয়োগের আবেদনের শুনানি বৃহস্পতিবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট সংরক্ষিত রেখেছে। শাহী ঈদগাহ সম্পর্কিত ১৬টি মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার এলাহাবাদ হাইকোর্টে হয়েছে, যার মধ্যে ভগবান কৃষ্ণ ও কাটরা কেশব দেব সম্পর্কিত মামলাও রয়েছে। মামলার অন্যতম বাদী রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী কৃষ্ণ জন্মভূমি কমপ্লেক্সের সমীক্ষা চেয়েছেন। বিচারপতি মায়াঙ্ক কুমার জৈন এই মুহূর্তে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে তার আদেশ সংরক্ষিত রেখেছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন বলেন, বারাণসীর জ্ঞানবাপি কমপ্লেক্সের আদলে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি কমপ্লেক্সের শাহী ঈদগাহ মসজিদে সমীক্ষা চালানো উচিত। এজন্য একজন অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ দিতে হবে। তিনি আদালতকে আদালত কমিশনার হিসাবে তিনজন আইনজীবীর একটি প্যানেল নিয়োগের অনুরোধ করেছিলেন। অন্য পক্ষ তথা মসজিদ কমিটি এই আবেদনের বিরোধিতা করে বলেছে, উপাসনালয় আইন এবং ওয়াকফ বোর্ড আইনের অধীনে মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আবেদনের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। বাদী পক্ষ এর বিরোধিতা করে বলেন, আদালত কমিশনার নিয়োগের দাবির বিষয়ে আদালত যে কোনো পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্বাধীন। তাদের যুক্তির সমর্থনে সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েকটি রায় উদ্ধৃত করা হয়েছিল। এছাড়াও জ্ঞানবাপি মসজিদ মামলায় দেওয়া রায়ের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, জ্ঞানবাপি মামলায়ও আদালত কমিশনার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল।
এমতাবস্থায় ঈদগাহ কমপ্লেক্সটি কোর্ট কমিশনার ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক সমীক্ষা করে এর ভিডিওগ্রাফি ও ফটোগ্রাফি করতে হবে এবং পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। বলা হয়েছিল, অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ করা হলে এবং ঘটনাস্থলের শারীরিক পরিদর্শন করা হলে মামলার শুনানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ বেরিয়ে আসবে কারণ মসজিদের নীচে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাথে সম্পর্কিত অনেক চিহ্ন এবং হিন্দু স্থাপত্য সম্পর্কিত প্রমাণ রয়েছে বলে তারা অভিযোগ করে। কমিটি অফ ম্যানেজমেন্ট মথুরা শাহি ঈদগাহের পক্ষে আইনজীবী মেহমুদ প্রাচা যুক্তি দিয়েছিলেন যে গত ৪৬ বছর ধরে কিছুই করা হয়নি। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টে মামলা স্থানান্তরের বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছে কমিটি, যার শুনানি আগামী ৯ জানুয়ারি হওয়ার কথা রয়েছে। সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড সিপিসি আদেশ ৭ বিধি ১১ এর অধীনে দেওয়ানি মামলার রক্ষণাবেক্ষণে আপত্তি জানায়। এতে আরও বলা হয়, উপাসনালয় আইনের অধীনে ১৯৪৭ সালের মর্যাদা পরিবর্তন করা যাবে না। এই ধরনের ক্ষেত্রে দেওয়ানি মামলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওয়াকফ আইনও এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এমন পরিস্থিতিতে যখন মামলাটি নিজেই টেকসই হয় না, তখন অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগের কোনো যৌক্তিকতা থাকে না। এটি বলা হয়েছিল যে দেওয়ানি মামলাগুলির স্থায়িত্ব প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তবেই আরও কিছু আদেশ দেওয়া যাবে। মন্দিরের পক্ষের আইনজীবী মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-সহ আরও বেশ কয়েকটি পক্ষ যুক্তি তর্ক করেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা শুনানিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত তার আদেশ সংরক্ষিত রেখেছেন। শুনানিতে উপস্থিত না থাকা পক্ষগুলোকে নোটিশ জারির ও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct