আপনজন ডেস্ক: মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি শুধু বয়স্ক ব্যক্তিদের থাকে বলে অনেকেই মনে করেন। এ কথা কিছুটা সত্যি হলেও, পুরোপুরি সঠিক নয়। স্ট্রোকের বেশির ভাগ রোগীর বয়স ৬৫ বছর বা তার বেশি। তবে বর্তমানে অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের মধ্যেও স্ট্রোকের হার বাড়ছে। আমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের মতে, মোট স্ট্রোক রোগীর ১০ শতাংশের বয়স এখন ৪৫ বছরের কম। বৈশ্বিক পরিস্থিতিও একই রকম। এ বয়সী ব্যক্তিরা স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাঁদের আখ্যায়িত করা হয় ‘স্ট্রোক ইন ইয়াং’ বা তারুণ্যে স্ট্রোক নামে। এই বয়সসীমা পারিবারিক, সামাজিক, পেশাজীবনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উৎপাদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অকালে স্ট্রোকের কারণে অল্প বয়সী এসব রোগীর অনেকেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন, কেউ কেউ অকালে মারাও যাচ্ছেন। অনেকের মনে প্রশ্ন, কম বয়সে কেন স্ট্রোক হয়? আসলে অল্প বয়সে স্ট্রোকের প্রধান কারণ নানা ধরনের হৃদ্রোগ। এ ছাড়া এ ধরনের স্ট্রোকের কারণ হতে পারে মস্তিষ্কের রক্তনালির জন্মগত ত্রুটি, স্থূলতা, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকা, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। বিভিন্ন রকম নেশার সঙ্গেও স্ট্রোকের সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে। স্ট্রোকের লক্ষণ সব বয়সের জন্য একই রকম—হঠাৎ মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া অথবা এক দিকের হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এমনকি কেউ কেউ অচেতনও হয়ে পড়তে পারেন, খিঁচুনিও হতে পারে। স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত মাথার সিটি স্ক্যান অথবা এমআরআই করতে হবে। তরুণ বয়সে স্ট্রোকের কারণ নির্ণয়ের জন্য ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, ডায়াবেটিস, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে রক্তনালির জন্মগত সমস্যা নির্ণয়ের জন্য মস্তিষ্কের এনজিওগ্রাম করতে হতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct