আপনজন ডেস্ক: দেশে ক্রমশ বেড়ে চলেছে ঘৃণার রাজনীতি। বিশেষ করে বিদ্বেষ ভাষণ, দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে সংখ্যালঘুদের বাড়ি ঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া এ সব ঘটনা কেন্দ্রের বিজেপি শাসকদের সাম্প্রদায়িক মনোভাবের প্রকাশ বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘ঘৃণার রাজনীতি’ বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিলেন শতাধিক প্রাক্তন আইএস অফিসার। যেখানেই বিজেপি ক্ষমতায়, সেখানেই ‘ঘৃণার রাজনীতি’র অভিযোগ উঠছে। বিজেপির মধ্যে এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটা বিশেষ ভাবমূর্তি রয়েছে। দলে অন্যদের তুলনায় তিনি স্বতন্ত্র। সেই সঙ্গে তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীও। দলগতভাবে এবং রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি হিসেবে এই ‘ঘৃণার রাজনীতি’ বন্ধ করতে আইনগতগত দিকের ব্যবহারের ক্ষমতা রয়েছে। সেকথা মাথায় রেখেই ‘ঘৃণার রাজনীতি’ বন্ধের জন্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন শতাধিক প্রাক্তন আইএএস অফিসার। নিজেদের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁরা খোলা চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমরা দেশে ঘৃণাভরা ধ্বংসের উন্মত্ততা প্রত্যক্ষ করছি। যেখানে বলিদানের বেদিতে শুধু মুসলমান বা অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষই নন, সংবিধান নিজেও বলি হচ্ছে।’ চিঠিতে যাঁদের সই আছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দিল্লির প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং, প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেনন, প্রাক্তন বিদেশসচিব সুজাতা সিং, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব জিকে পিল্লাই, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রধান সচিব টিকেএ নাইয়ারের মতো দেশের সামনের সারির প্রাক্তন ১০৮জন প্রাক্তন আইএএস।
অসম, দিল্লি, গুজরাট, হরিয়ানা, কর্ণাটক, মধ্য প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য জুড়ে গত কয়েক বছর এবং মাসগুলিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, দিল্লি (যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করে) ব্যতীত সমস্ত রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে - একটি ভয়ঙ্কর নতুন মাত্রা অর্জন করেছে, বলেছিল। প্রাক্তন এই আমলারা বলেন, তারা বিশ্বাস করেন যে এই হুমকি অভূতপূর্ব এবং এটি কেবল সাংবিধানিক নৈতিকতা ও আচার-আচরণই নয়। সামাজিক বৈচিত্র যা আমাদের সংবিধানকে সংরক্ষণের জন্য এত সূক্ষ্মভাবে সম্মিলিত করা হয়েছে, সম্ভবত তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী প্রাক্তন আমলারা লিখেছেন, এবারও সরকারের কাছে এমন অভিযোগপত্র পাঠাতেন না। যদি না, যে সাংবিধানিক ভবনগুলো দেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে তিলে তিলে গড়ে তুলেছে, তা পোক্ত করেছে, সেই কাঠামোগুলো ধ্বংস হয়ে না-যেত। আর, তাই তাঁরা বাধ্য হয়েছেন লিখতে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct