এহসানুল হক, বসিরহাটঃ বসিরহাটের সীমান্তবর্তী এলাকার তরণীপুর বাজারে 'আমার আশা ফাউন্ডেশন' আয়োজিত সিরাতুন্নবী সেমিনার ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হল বৃহস্পতিবার সন্ধায়। উক্ত অনুষ্ঠানে হাফেজ সাজ্জাদ আলির কোরআন তেলাওয়াত ও নাতে রসুলের মাধ্যমে শুভসূচনা করা হয়।সংগঠনের চেয়ারম্যান মোশাররফ মোল্লার আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, গোবরডাঙ্গা রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্বত্যরুপানন্দ মহারাজ, জেলা ইমাম কো-অর্ডিনেটর পীরজাদা হাসানুজ্জামান, পশ্চিমবঙ্গ ইমাম মোয়াজ্জেন সমিতির সম্পাদক হাফেজ আজিজুদ্দিন, সিরাত সম্পাদক ও বিশিষ্ট শিক্ষক আবু সিদ্দিক খান, কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী মোফাককেরুল ইসলাম, বেডসের রাজ্য সম্পাদক শাজাহান মন্ডল, সহ-সভাপতি আলফাজ হোসেন, বিশিষ্ট সমাজসেবী জিয়াদ আলি সহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ। এদিন, সীরাত সম্পাদক ও শিক্ষক আবু সিদ্দিক খান সিরাতুন্নবী গুরুত্ব এবং তাৎপর্য বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, অন্য ধর্মালম্বী মানুষ নবীজির জীবনচরিত গবেষণা করে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে। অথচ আমরা হতভাগা মুসলমান এখনো আমাদের নবীকে চিনতে পারলাম না, "রহমাতুল্লিল আলামিন" তথা জগতবাসীর জন্য রহমত স্বরূপ করে পাঠিয়েছিলেন। তিনি বিশেষ কোন সম্প্রদায়ের নবী ছিলেন না। গোটা মানবজাতির নবী ছিলেন। আজ যারা নবী সম্পর্কে ব্যঙ্গচিত্র করে কুৎসা রটিয়ে অপমান করছে আমরা নিন্দা জানাচ্ছি।
পশ্চিমবঙ্গ ইমাম মোয়াজ্জেন সমিতির সম্পাদক হাফেজ আজিজুদ্দিন বলেন, নবী পাকের (সাঃ) সাম্য, মৈত্র, সৌভ্রাতৃত্বের স্থাপন করা ছিল তার একমাত্র উদ্দেশ্য। জাহেলিয়াতের যুগে তথা মূর্খ ও বর্বরতার যুগে নারীদের সম্মান, ইজ্জত ছিল না, জীবন্ত দাফন করে দেওয়া হতো। হযরত মুহাম্মদ সঃ নারীদের ইজ্জত, আব্রু, মর্যাদা দিয়েছেন। পুরুষের মতো সমান অধিকার দিয়েছেন। দাস মুক্তির তিনি ছিলেন পথিকৃৎ।
পীরজাদা হাসানুজ্জামান সাহেব বলেন "সকল মানুষের কল্যাণ সাধন করাই ছিল নবী সঃ এর একমাত্র লক্ষ্য।" এছাড়া তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল মানুষের সমান অধিকারের কথা, স্বাধীনভাবে বাঁচার কথা, একে অপরে মর্যাদার কথা ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেন।
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী মফাককেরুল ইসলাম বলেন, "আমি মনে করি দেশে সাংঘাতিক, ভয়ংকর পরিস্থিতি চলছে। আমাদের জাগতে হবে, সজাগ হতে হবে।" তিনি এনআরসি নিয়ে যথেষ্ট অভয় দেন। তিনি ৩৭০ ধারা উচ্ছেদ, তালাক বিষয়ক, সিএএ আইন প্রমুখ আইন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। স্বামী স্বত্যরুপানন্দ মহারাজ বলেন, এই ভারতবর্ষের ঐতিহ্য সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখা সকল সম্প্রদায়ের মানুষেরই কর্তব্য। আমরা হিন্দু-মুসলিম খ্রিস্টান জৈন বৈদ্য সকলে একসাথে এই ভারতবর্ষের সম্প্রীতি বজায় রাখব। ঐক্যবদ্ধ ভাবে বাঁচবো। দেশের উন্নয়নের কথা আমরা বেশি বেশি করে ভাববো। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শিক্ষক প্রসনজিৎ রাহা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct