রুপম দে,কলকাতা,আপনজন: একদিকে বগটুই , অন্যদিকে আনিস খান। দুই ক্ষেত্রেই রাজের শাসকদলের ক্ষমতা ধরে রাখা ও তোলাবাজির বখরা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠছে। একইভাবে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও তৃণমূলের নেতা–মন্ত্রীদের যুক্ত থাকার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। অন্ত: অভিযুক্তদের যে কল–রেকর্ড ফাঁস হয়েছে তাতে সাংসদ নাদিমুল হক, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও গোলাম রব্বানির নাম প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ঘটনা নিয়ে যখন রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড়, তখন আরও বড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠল দলেরই আর এক বিধায়ক ও তার সাগরেদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ করেছেন এক প্রমোটার।আর তার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বিধায়ক দিলীপ মণ্ডল।
আবদুস সামাদ নামে এক বিজ্ঞানী তথা আইআইটি মাদ্রাজের অধ্যাপক অভিযোগ করেছেন, বগটুইতে দুর্নীতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটল। একই ধরনের দুর্নীতি বিষ্ণুপুরে (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) হচ্ছে। এক ভূমি মাফিয়া যার নাম বাবন গাজী বা রাজীব (তিনি আবার তৃণমূল, ব্লক সভাপতি) তার কোম্পানি সূচনা ডেভেলপারস লিমিটেডের ছত্রছায়ায় জমি বিক্রি করার নামে জনসাধারণের কাছ থেকে টাকা তুলেছেন, আর সেই জমি অন্যদের কাছে বিক্রি করেছেন (Buyer: Planet RealEstate Pvt Ltd, owner: Mr Suvendu Naskar)। রাজীব হল সেখানকার বিধায়ক দিলীপ মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। অধ্যাপক আরও অভিযোগ করেছেন, আমার মনে হয় দিলীপ মণ্ডল বিধায়কও এই মাফিয়াচক্রের অঙ্গ। অন্তত ৬০ কোটি টাকার প্রতারণা তারা করেছে। আমি তিন কাঠা জমি কেনার জন্য সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়েছি, সে টাকা ফেরত বা জমি কিছুই দিচ্ছে না। চুক্তি অনুসারে ১৮ শতাংশ সুদের হারে সেই টাকা এখন ১৫ লাখ হয়েছে। একইভাবে আমার এক বন্ধু ড. সায়েম আলম (সিএসআইআর, চেন্নাইয়ের বিজ্ঞানী) ৬ লাখ টাকা দিয়েছেন। পশ্চিম বাংলায় আরও গোটাদশেক বন্ধু কমপক্ষে ২০লক্ষ টাকা দিয়েছে। আমার অনুমান, তারা আরও অনেককে ঠকিয়েছে। আমার টাকা ফেরত পেতে আমি কনজিউমার সেল, হাউসিং ডিপার্টমেন্ট, কনজিউমার অ্যাফেয়ার ডিপার্টমেন্ট, বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক আশীষ ব্যানার্জি, বিধায়ক দিলীপ মণ্ডলকে জানিয়েছি। অভিযোগকারী আরও জানান, টাকা ফেরত দিতে রাজীব গাজীকে রাজী করতে বললে বিধায়ক দিলীপ মণ্ডল তার উপর চেঁচিয়ে ওঠেন। যেহেতু তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থাকেন। বীরভুম নিবাসী ওই অধ্যাপক বলেন, আমার বাড়ি এলাকার বিধায়ক আশিস ব্যানার্জি এবং সাংসদ শতাব্দী রায়। আশিসবাবু শুধু দেখব বলে ছেড়ে দিয়েছেন। রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী গোলাম রাব্বানি ফোনে দু-চার কথাও শুনিয়ে দেন। বিজ্ঞানী সামাদ বলেন, এটা আমার কষ্টার্জিত অর্থ (কেবল বেতন)। আমি পশ্চিমবঙ্গে ফিরে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু মনে হচ্ছে প্রতারণা আমাকে ভাবনা বদলাতে বাধ্য করেছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তারা অবশ্য সাড়া দেননি। তাই নিরুপায় অবস্থায় রয়েছেন বিজ্ঞানী আবদুস সামাদ। তিনি বলেন, আমার প্রাণের সংশয় দেখা দিয়েছে। সবাই ফিরিয়ে দিচ্ছে। ক্রেতা–সুরক্ষা আদালতেও তেমন কিছুই হচ্ছে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct