সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বাঁকুড়ার খাতড়ায় এক প্রশাসনিক সভায় বলেছেন, সন্দেশখালির ঘটনার সঙ্গে নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের কোনও তুলনা টানা চলবে না।মনে রাখবেন সিঙ্গুর সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম নন্দীগ্রাম, খাতড়া খাতড়া এবং বিষ্ণুপুর বিষ্ণুপুর। প্রতিটি জায়গার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই একটির সঙ্গে অন্যটির তুলনা করবেন না। কারও নাম না করে মমতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হিংসায় উস্কানি দেওয়ার মতো ভুল যেন কেউ না করে। কোথাও কোনো রক্তপাত হোক, নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটুক তা আমি চাই না। আমি কোনো অন্যায়কে সমর্থন করি না এবং আমি আমার জীবনে কখনও তা করব না। অজান্তে কোথাও কোনো অন্যায় হয়ে থাকলেও আমি সেটাও সমর্থন করি না। সন্দেশখালি ও নন্দীগ্রামকে এক করে দেখার চেষ্টা করছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি, এই ইঙ্গিত পাওয়ার মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যবলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, ‘দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম হতে চলেছে সন্দেশখালি।’ বুধবার মমতা সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও সন্দেশখালির সঙ্গে নন্দীগ্রামকে এক করে দেখার চেষ্টার বিরোধিতা করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও।
খাতড়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী পুনরায় বলেছেন, আদিবাসীদের জমি জোর করে দখল করতে দেব না। সেই ইচ্ছাতেই বাজালেন ধামসা-মাদল এবং আদিবাসী নৃত্যে পা মেলালেন। সাথে গান গাইলেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল। খাতরার খড়বন ময়দানে একটি জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়১২০ টি সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি মানুষের হাতে বিভিন্ন প্রকল্পের নথি তুলে দেন। এদিন সভা মঞ্চে যখন মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে ওঠেন অলচিকী ভাষায় সকলকে সম্বোধন করে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। বক্তব্যের শুরুর পর তিনি বলেন, একটা সময় বাঁকুড়া পুরুলিয়া এসব জায়গাতে অনেক রক্ত ঝরত। তৃণমূল সরকার আসার পর ওসব বন্ধ হয়ে গেছে। এদিন বাঁকুড়ার সভামঞ্চে প্রত্যেক জেলায় বিগ বাজার নির্মাণের প্রস্তাব রাখলেন যেখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কাজ করবে। এছাড়া বাঁকুড়া, পুরুলিয়া,ঝাড়গ্রাম এর জঙ্গল লাগোয়া যেসব গ্রামের বাসিন্দাদের হাতের আক্রমণে মৃত্যু হয়ছে তাদের পরিবারের একজনের হাতে সরকারি চাকরি তুলে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয় কর্তব্যরত অবস্থায় কোন আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলার মৃত্যু হয় তাদের পরিবারকে ২ লক্ষটাকা তুলে দেওয়া হবে। এসবের পাশাপাশি তিনি বিরোধী বিজেপির এক হস্তে নিয়ে বলেন বাঁকুড়ার দুইটি লোকসভা বিজেপি দখলে কিন্তু তাদেরকে আর দেখতে পাওয়া যায় ন। এবার ভোট চাইতে হলে বিজেপির বেলুন ফুঁস করে দেওয়ার কথা বলেন। অন্যদিকে, বাঁকুড়ার প্রশাসনিক সভায় মমতা এদিন বলেন, ‘পাগড়ি পরা দেখলেই খলিস্তানি বলছে’। মুসলিম অফিসারকে দেখে পাকিস্তানি বলে দেবে?’ তবে, লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফর এবং দলীয় উদ্দেশ্য তার বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct