আপনজন ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলমান রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের এক হাজার দিন পূর্ণ হয়েছে। এক হাজার দিন পরেও বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই চলছে। এখনও কিয়েভে মাঝে মধ্যেই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হচ্ছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বসার আগেই জো বাইডেন রাশিয়ায় মার্কিন রকেট হামলার অনুমতি ইউক্রেনকে দিয়ে দিয়েছেন। আর রাশিয়া হুমকি দিয়েছে, এরকম আক্রমণ হলে তার উপযুক্ত ও কড়া জবাব দেয়া হবে।
মঙ্গলবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক হাজার দিন পূর্ণ হয়েছে। এই যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনের হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। লাখ লাখ মানুষ বাইরের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ইউরোপে সবচেয়ে বড় সংঘাত। তবে এর ফলে সামরিক দিক থেকে কার কত ক্ষতি হয়েছে তা দুই দেশের পক্ষ থেকেই গোপন রাখা হয়েছে। গোয়েন্দাদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পশ্চিমা দেশগুলো যে হিসাব করেছে, তাতে এক দেশের হিসাবের সঙ্গে অন্য দেশের হিসাবের প্রচুর ফারাক রয়েছে। তবে সব রিপোর্টই বলছে, দুই পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর মানুষ হতাহত হয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিটি অঞ্চলে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই যুদ্ধের সময় শোক নেমে এসেছে। বড় শহর থেকে দূরের গ্রাম পর্যন্ত সব জায়গায় সামরিক অন্ত্যেষ্টি নিয়মিত হয়েছে, রাতেও বারবার সাইরেন বেজেছে। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করেছেন। ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন তারা।
জো বাইডেন রাশিয়ায় মার্কিন রকেট হামলার অনুমতি ইউক্রেনকে দিয়ে দিলেও ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এসে এই নীতির পরিবর্তন করতে পারেন। সমর-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু এই পদক্ষেপ নিলে ৩৩ মাস ধরে চলা যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির বদল হবে না। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প আসার পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তিনি এবার এই যুদ্ধ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবেন?
এদিকে ক্রমশ শীত আসছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রাশিয়া একদিনে ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০টি ড্রোন দিয়ে আক্রমণ করেছে। তার আগ দিয়ে কিয়েভও মস্কোতে তাদের সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার গভীরে মার্কিন রকেট দিয়ে হামলার অনুমতি দেয়া, ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সাহায্য দেওয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
রাশিয়ার দাবি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, আগামী বছর কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। তবে যে কোন আলোচনা শুরুর আগে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে এবং ইউক্রেনকে উপযুক্ত নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে। ক্রেমলিন বলেছে, গত জুনেই প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার উচ্চাশা বন্ধ করতে হবে। আর চারটি এলাকা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু ইউক্রেন সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে।
ইউক্রেন পরিস্থিতি
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দুই দেশের মধ্যে কোনও রকম আলোচনা হয়নি। সম্ভাব্য আলোচনার আগে দুই দেশই তাদের শক্তি বাড়িয়ে নিতে চাইতে পারে। ইউক্রেন ও রাশিয়া চাইবে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের আরো কিছুটা জমি দখল করে নিয়ে আলোচনায় বসতে। ইউক্রেন আবার আগস্ট থেকে রাশিয়ার কুরস্কের একটা অংশ দখল করে রেখেছে। সেখানে তারা সবচেয়ে দক্ষ সেনা পাঠিয়েছে। ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া তাদের ঠেকাতে সেখানে ৫০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। তাছাড়া তারা পূর্ব ইউক্রেনেও দ্রুত কিছু এলাকা দখল করতে চায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct