আপনজন ডেস্ক: এই মুহূর্তে চলছে পবিত্র রমজান মাস। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকছেন গোটা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম। কয়েক বছর ধরে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে রোজা পড়েছে গ্রীষ্মকালে। ফলে এসব দেশের মুসলিমদের রোজা রাখতে হচ্ছে গরমের মধ্যে দীর্ঘসময় ধরে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, এত গরমের মধ্যে রোজা রাখলে একজন মানুষের শরীরে কোনও পরিবর্তন ঘটে কিনা। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, শেষবার খাবার খাওয়ার পর আট ঘন্টা পার না হওয়া পর্যন্ত মানুষের শরীরে সেই অর্থে রোজার প্রভাব পড়ে না। আমরা যে খাবার খাই, পাকস্থলীতে তা পুরোপুরি হজম হতে এবং এর পুষ্টি শোষণ করতে অন্তত আট ঘন্টা সময় নেয় শরীর। যখন এই খাদ্য পুরোপুরি হজম হয়ে যায়, তখন যকৃৎ এবং মাংসপেশিতে সঞ্চিত থাকা গ্লুকোজ, সেটা থেকে শক্তি নেওয়ার চেষ্টা করে। শরীর যখন এই চর্বি খরচ করতে শুরু করে, তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
সারাদিন রোজার কারণে যেহেতু রক্তে সুগার বা শর্করার মাত্রা কমে যায়, সে কারণে হয়তো শরীর কিছুটা দুর্বল হয়ে যায় এবং ঝিমুনির ভাব আসতে পারে। এছাড়া কারও কারও ক্ষেত্রে মাথাব্যাথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বা নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে। এ সময়টাতেই আসলে শরীরে সবচেয়ে বেশি ক্ষুধা লাগে। প্রথম কয়েকদিনের পর শরীর যখন রোজায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছে, তখন শরীরে চর্বি গলে গিয়ে তা রক্তের শর্করায় পরিণত হচ্ছে। কিন্তু রোজার সময় দিনের বেলায় যেহেতু কিছুই খাওয়া বা পান করা যায় না তাই রোজা ভাঙ্গার পর অবশ্যই সেটার ঘাটতি পূরণের জন্য প্রচুর জল পান করতে হবে। তা না হলে শরীরে মারাত্মক জলশূন্যতা হতে পারে। বিশেষ করে গরমের দিনে যদি শরীরে ঘাম হয় তাহলে এ সমস্যা মারাত্মক হতে পারে। ক্যামব্রিজের এডেনব্রুকস হাসপাতালের 'অ্যানেসথেসিয়া এন্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিনের' কনসালট্যান্টরা জানাচ্ছেন, সাধারণত দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাই এবং এর ফলে আমাদের শরীর অন্য অনেক কাজ ঠিকমত করতে পারে না। কিন্তু রোজার সময় যেহেতু আমরা উপোস থাকছি, তাই শরীর তখন অন্যান্য কাজের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। কাজেই রোজা কিন্তু শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এটি শরীরের ক্ষত সারিয়ে তোলা বা সংক্রমণ রোধে সাহায্য করতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct