আপনজন ডেস্ক: তীব্র শীত ও ভারী তুষারপাতের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বসনিয়ায় আশ্রয় নেয়া হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সমীক্ষা অনুযায়ী, বসনিয়ায় আশ্রয় নেয়া শরণার্থীর সংখ্যা ৯ হাজারের কাছাকছি। তবে স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, বাস্তবে দেশটিতে এর তিনগুণ বেশি শরণার্থী রয়েছে।
তবে মানবিক বিপর্যয় রোধে বসনিয়ার সামরিক বাহিনী শুক্রবার শত শত অভিবাসীর আশ্রয়ের জন্য তাঁবুর ব্যবস্থা করছে। তীব্র শীতে এই অভিবাসীরা পুড়ে যাওয়া শরণার্থী শিবিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
এক সপ্তাহ আগে বসনিয়ার উত্তর-পশ্চিমে ক্রোয়েশিয়া সীমান্তের কাছে আগুনে পুড়ে ছাই হওয়া অপরিচ্ছন্ন লিপা শরণার্থী শিবিরের আশ্রয়হীন এক হাজারের মতো অভিবাসীকে কোনো ব্যবস্থাপনা ছাড়াই ফেলে রাখার জন্য বসনিয়া আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার শিকার হয়েছে। সামরিক বাহিনী জানায়, শুক্রবার ১৫০ সৈন্য অভিবাসীদের আশ্রয়ে তাঁবু খাটানোর জন্য পৌঁছায়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পরিচালনায় এ কার্যক্রম চালানো হবে।
এর আগে শুক্রবার, অভিবাসীরা বসনিয়ার তাদের ভয়াবহ অবস্থা জানিয়ে এক বিক্ষোভ আয়োজন করেন। ত্রাণ সংস্থাগুলো জানায়, শত শত অভিবাসী খাদ্য সহায়তা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ব্যানার প্রদর্শনীর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। এই সপ্তাহ আগে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে ছিল, লিপার অভিবাসীদের মধ্য বসনিয়ায় সাবেক এক সামরিক অবস্থানে স্থানান্তরিত করা হবে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদের মুখে এ পরিকল্পনা বাতিল করা হয়।
অভিবাসীরা স্থানান্তরের জন্য ২৪ ঘণ্টা বাসে অপেক্ষা করলেও শেষে পুড়ে যাওয়া লিপা শিবিরেই তাদের স্থান হয়। প্রথম দুই রাত কর্দমাক্ত শিবিরেই আগুন জ্বালিয়ে তারা শীত তাড়ানোর চেষ্টা করে। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ ও দারিদ্র্য পেছনে ফেলে পালিয়ে আসা হাজার হাজার লোক বসনিয়ায় জড়ো হচ্ছেন। বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর এই প্রবাহ মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে দেশটি।
রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী বিষযক সংস্থা আইওম, ইউরোপিয়ান কমিশনসহ বিভিন্ন এনজিও বেশ কয়েকবার বসনিয়ার সরকারকে অনুরোধ করেও রিফিউজিদের খাদ্য ও পানিসহ জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে। এর জের ধরে গত সপ্তাহে বসনিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় মিউনিসিপ্যালিটি লিপার একটি শরণার্থী শিবির বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আইওএম। লিপার এ শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১৪০০ শরণার্থী বসবাস করতেন। তবে গত সপ্তাহে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে এ শরণার্থী শিবিরটি ধ্বংস হয়ে যায়। যদিও তাদের মধ্যে কয়েকশো রিফিউজিকে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় একটি সেনাক্যাম্পে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু দেশটির সরকারের বিভিন্ন মহলের মতবিরোধের ফলে এ সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct