সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: নবান্ন অভিযানে পুলিশ চাইলেই গুলি চালাতে পারত । বুধবার জেলা সফরে তমলুকে প্রশাসনিক বৈঠকে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি নিজে তা চাননি। তাই গুলি চলে নি।কারণ, তাঁর সরকার কোনও আন্দোলনে বাধা দেওয়ার পক্ষপাতী নয়। তবে একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, বিজেপি আন্দোলনের নামে যে ভাবে পথে নেমে ‘গুণ্ডামি’ করেছে, তা-ও কাম্য নয়। পুলিশ যথেষ্ট ‘সংযত’ ছিল বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে প্রশাসনিক বৈঠক ছিল মমতার। ঘটনাচক্রে, এই পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতেই বাড়ি শুভেন্দু অধিকারীর। যিনি রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এবং ২৪ ঘণ্টা আগে নবান্ন অভিযানে যোগ দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। পুলিশের বিরুদ্ধে শাসকদল তৃণমূলের হয়ে কাজ করার অভিযোগও করেছেন। মমতা ওই বিষয়ে যোগ্য জবাব দিয়েছেন, শুভেন্দুর জেলাতে প্রশাসনিক বৈঠক করতে গিয়েই।বিজেপির মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘আমি আন্দোলনে বাধা দেওয়ার পক্ষে নই। কিন্তু আন্দোলনের নামে ব্যাগে করে বোমা আনা হয়েছে, বন্দুক আনা হয়েছে। অন্য রাজ্য থেকে লোক এনে হাওড়া স্টেশনে রেলের নিরাপদ আশ্রয়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এটা কাম্য নয়।বিজেপি গুণ্ডামি করার জন্য নবান্ন অভিযান করেছে।’’মঙ্গলবার বিজেপির অভিযান মাঝপথেই রুখে দিয়েছিল পুলিশ। হাওড়া, সাঁতরাগাছি এবং কলেজ স্ট্রিটে বিজেপির তিনটি মিছিল এবং পরে লালবাজারে চতুর্থ মিছিলও থামিয়ে দেওয়া হয়। নবান্নের ধারে কাছেই পৌঁছতে পারেনি বিজেপির কোনও মিছিল। বিজেপি নেতৃত্ব এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে অনাবশ্যক দমননীতি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। এমনকি, তাঁরা এমনও অভিযোগ করেছিলেন যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতার নির্দেশেই পুলিশ অকারণে বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করেছে! বুধবার সেই অভিযোগেরই জবাব দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, ‘‘অনেক পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে আহত হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডেভর্তি হতে হয়েছে। ওরা কী ভাবে মেরেছে । ওর অপারেশন করাতে হবে। কিন্তু তার পরেও পুলিশ গুলি চালায়নি।’’
বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে ‘বিশৃঙ্খলা’ তৈরি করার অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘‘চাইলেই পুলিশ গুলি চালাতে পারত। কিন্তু আমি তা মনে করি না। তা কাম্যও নয়। পুলিশ যথেষ্ট সংযত ছিল। তবে যারা অশান্তি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নেবে।’’ নবান্ন অভিযানে পুজোর আগে ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘সামনে পুজো। লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয় এই পুজোকে কেন্দ্র করে। বিজেপির অভিযানে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পুজোর বাজার নষ্ট হয়েছে।’’ বিজেপির আন্দোলনে সরকারি কাজেও বাধা পড়েছে জানিয়ে মমতা বলে দেন, ‘‘সরকারি কাজে বাধা কোনওমতেই বরদাস্ত করব না!’’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct