আজিজুর রহমান, গলসি, আপনজন: বাদামী শোষক পোকার আক্রমণে একযোগে ক্ষতিগ্রস্ত গলসির চাষিরা। এলাকায় বিঘার পর বিঘার জমির ধান গাছের রস চুষে গাছকে শুকিয়ে দিচ্ছে পোকা। এরফলে মাঠের সোনালী ধান আচমকা বাদামী ধুসর হয়ে যাচ্ছে। নামীদামি কীটনাশক প্রয়োগের পরও কোন কাজ হচ্ছে বলে দাবী চাষিদের। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে গলসির চাষিরা। এলাকার বিভিন্ন মাঠের জমিতে আচমকা ধেয়ে এসেছে বাদামী শোষক পোকার আক্রমণ। সোনার ধান বাঁচাতে এখন কীটনাশক ওষুধ ও স্প্রে মেশিন নিয়ে মাঠে নিত্য আনাগোনা চাষিদের। তবে এতে বড় কিছু লাভ হবেনা বলে দাবী চাষিদের। তবুও কিছুটা হলেও ফলন বাঁচতে মরিয়া চেষ্টায় তারা। এমন অবস্থায় সরকারি বীমা এখন ভরসা চাষিদের। এ কথাই জানাচ্ছেন চাষিদের এক অংশ। স্থানীয় রামপুরের চাষি মিঠু মির্জা বলেন, ত্রিশ বিঘা চাষ করেছিলাম। পাতাপচা ও মাঝরা পোকার জন্য দুইবারে চোদ্দ হাজার টাকা খরচ করে স্প্রে করেছি। আটত্রিশ হাজার টাকা খরচ দুই বার শোষকের কীটনাশক স্প্রে করলাম। তাতেও আট বিঘা জমি ধান শেষ। কুড়ি পঁচিশ পরে ধান কাটা শুরু করবো। তাই আর একবার স্প্রে করবে। তাতে কিছুটা রক্ষা হতে পারে।
তার দাবি, প্রতিবছর তার কীটনাশক বাবদ খরচ হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা। এবারে তা ৬৮ হাজারে পৌছে যাবে। তিনি বলেন, ধান গাছের রস নয়, এলাকার চাষিদের রক্ত চুষছে বাদামী শোষক। পোতনার চাষি নীলু দত্ত, গৌতম মুখার্জ্জী বলেন, সব জমিতে আক্রমণ শুরু হয়েছে। কদিন গেলেই মাঠ কে মাঠ বাদামী হয়ে যাবে। তবুই শেষ চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে তাতে লাভ হবেনা বলে মনে হচ্ছে। ফলনের আশি শতাংশ ধান শেষ হয়ে যাবে। তারা জানাই, জলের জন্য চাষ দেরীতে শুরু হয়েছে। তাছাড়াও আবহাওয়ার তারতম্যের জন্য এমন হয়েছে। তাদের দাবী, গোটা গলসি এলাকা জুড়েই শুরু হয়েছে বাদামী শোষক পোকার আক্রমণ। আর এক চাষি উজ্জ্বল মুখার্জ্জী বলেন, বার বার চাষিরা লোকসানে পরছে। গলসি এলাকার সব জায়গায় বাদামী শোষকের উপদ্রবে ক্ষতি শুরু হয়ে গেছে। তিন চারবার নামীদামি কীটনাশক স্প্রে করে চাষিরা নিদারুণ অর্থ সংকটে পরে গেছে। তবে সঠিক ফলন পাবেনা এটা নিশ্চিত। মাঠে ধানের গাছ আজকে ভাল, হঠাৎ করে কাল থেকে বাদামী হতে শুরু করছে। নামীদামি কীটনাশক কোম্পানীর কীটনাশক প্রয়োগ করে কোন লাভভ হয়নি। এমন অবস্থায় সরকারি শষ্য বিমাই তাদের বাঁচাতে পারবে। চাষিদের দাবী, সরকার তাদের ক্ষতি পুরনের ব্যবস্থা করুক।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct