আপনজন ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন হিমাচল প্রদেশে নির্বাচনের ঘোষণার সাথে সাথে, বিজেপি, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি সহ আঞ্চলিক দলগুলিও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আগামী ১২ নভেম্বর হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা ভোট। আর ভোট গণনা ৮ ডিসেম্বর সকাল আটটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত হবে ভোটগ্রহণ। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, কোনও মুসলিম মন্ত্রী হওয়া তো দূরের কথা, এখন পর্যন্ত কোনো মুসলিম বিধায়ক নির্বাচিত হননি হিমাচল বিধানসভায়। যদিও মুসলিমদের থেকে কম সংখ্যক শিখ সম্প্রদায়ের বর্তমানে একজন বিধায়ক রয়েছে। ৬৮টি আসন বিশিষ্ট হিমাচল প্রদেশ বিধানসভায় বিজেপি, কংগ্রেস ও আপ শিখ সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে প্রার্থী করলেও একজন মুসলিমকে প্রার্থী করেনি।
হিমাচল প্রদেশে যে মুসলিম জনসংখ্যা নেই তা নয়। অথচ ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, হিমাচল প্রদেশের মোট জনসংখ্যা ৬৮ লক্ষ। এর মধ্যে হিন্দু জনসংখ্যা ৬,৫৩২,৭৬৫ যা মোট জনসংখ্যার ৯৫.১৭ শতাংশ। হিমাচল প্রদেশে মুসলিমদের সংখ্যা ১,৪৯,৮৮১ যা প্রায় ২.১৮ শতাংশ। এর পরই রয়েছে শিখ সম্প্রদায়। শিখদের সংখ্যা মুসলিমদের প্রায় অর্ধেক ৭৯,৮৯৬ যা প্রায় ১.১৬ শতাংশ। এরপরেই রয়েছে বৌদ্ধ ১.১৫ শতাংশ, খ্রিস্টান ০.১৮ শতাংশ। হিমাচল প্রদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ‘রাজপুত’রা সবচেয়ে বেশি। তারা হিন্দুদের মোট জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ। যেখানে প্রায় ১৮ শতাংশ ব্রাহ্মণ ভোটার। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ভোটারদের নিয়ে তাই বিজেপি জাতপাতের রাজনীতি করেই নির্বাচনে উতরে যেতে চায়। কংগ্রেস ও আপ প্রার্থী দিলেও তারা মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও আগ্রহ দেখায়নি। যদিও এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সিরমৌর জেলার নাহান বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেব লড়ছেন একমাত্র মুসলিম প্রার্থী ৩৪ বছর বয়সি রমজান খান। যদিও পান্থ সাহিব কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়ন জমা করেছিলেন শামসের আলি। কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করে নেন। রমজান খানের বাড়ি সিরমৌর জেলার পান্থ সাহিবের মাজরা এলাকার মেলিয়ন গ্রামে। রমজানের স্ত্রী জুলফানা ছাড়াও রয়েছে দুই সন্তান আরবাজ খানও ও ইশান খান। পেশায় চাষি রমজান খানের কোনও প্যান কার্ড ও নেই। ব্যাঙ্কে মাত্র আড়াই হাজার টাকা রয়েছে।
অন্যদিকে, প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নেওয়া ৫৯ বছর বয়সি শামসের আলি বাড়ি শিরশৌর জেলার পান্থ সাহিবের জামনিওয়ালা এলাকার টোকা নাগলা গ্রামে। পেশায় পরিবহণ ব্যবসায়ী শামসের আলি স্ত্রী রাহেশান ছাড়াও রয়েছে মুই সন্তান আমর আলি ও নাভিদ আলি। মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেরলেও শামসের আলির সম্পত্তির পরিমাণ বেশ কয়েক কোটি। সূত্রের খবর কোনও রাজনৈতিক দল সমর্থন না করায় শামসের আলি প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করে নেন। উল্লেখ্য, হিমাচল প্রদেশে ১২ নভেম্বর বিধানসভা ভোট অনুষ্ঠিত হলেও গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে ৮ ডিসেম্বর ভোট গণনা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct