সুব্রত রায়, সুন্দরবন, আপনজন: রাজ্যের আবহাওয়া দফতরের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই ঝড়ের গতিবিধি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের উপকূল ভাগে ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা রয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের। স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভাসতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা সুন্দরবন এলাকা। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ ,সাগর, ঝড়খালি, গোসাবাতে পৌঁছে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের বাহিনী।নজরদারি চালানো হচ্ছে সুন্দরবনের নিচু এলাকাগুলিতে। শুধু তাই নয় ইতিমধ্যেই মাইকিং করা হচ্ছে ঝড়খালি, কাকদ্বীপ, সাগর, পাথরপ্রতিমা, নামখানা সহ একাধিক উপকূলীয় থানা এবং সুন্দরবন উপকূলীয় থানা এলাকাতে। যে সমস্ত মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিল তারা যাতে দ্রুত ফিরে আসে তার জন্য নদী বক্ষে দিনভর চলে মাইকিং -এর ব্যবস্থা। ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকাতে যে সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলি আছে সেগুলো দ্রুত খালি করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৪ তারিখ থেকে কোন পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না পর্যটকদের। শুধু তাই নয়, সুন্দরবনের নদী বক্ষে চলাচলকারী ফেরি নৌকা গুলিকে বন্ধ রাখা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।অন্যদিকে, পর্যটনকেন্দ্র গুলিতে সরকারি অনুমতি দেওয়াও বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনও পর্যটক বোট যাতে সেই সময় জঙ্গলে না ঢুকতে পারে তার জন্য বনদফতর ও পুলিসের পক্ষ থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে। শুধু তাই নয় ইতিমধ্যেই বহু পর্যটন কেন্দ্রের ভ্রমণ বাতিল করা হয়েছে। ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ মহকুমার অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ ,সাগর, ঝড়খালি, গোসাবাতে পৌঁছে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের বাহিনীরা। বিশেষ করে নদী বাঁধের ওপর এই নজরদারি চালানো হচ্ছে। যেহেতু অমাবস্যার কোটাল রয়েছে এর ফলে সুন্দরবনের একাধিক নদী ও সমুদ্রতে জলস্ফিতি দেখা দেবে । কোথাও যাতে নদী বাঁধ ভেঙে বিপদ ঘটতে না পারে সেদিকেই মূলত লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকাতে যে সমস্ত সাইক্লোন সেন্টারগুলি আছে সেগুলি পরিস্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন স্কুলগুলোতেও দুর্গত মানুষদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি নিন্মচাপ অঞ্চল সৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ে ঘনীভূত হওয়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে। আছড়ে পড়তে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার উপকূলবর্তী এলাকায়। আর সেই কারণে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে সতর্কতা জারি হয়েছে গোটা সুন্দরবন জুড়ে। দুর্যোগ মানেই সবথেকে ভোগান্তি উপকূলের জেলার। সিত্রাং মোকাবিলায় প্রস্তুত জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই একাধিক কমিটি গঠন করেছে তারা। প্রসঙ্গত এদিনই আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বাংলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সুন্দরবন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকছে। ভালো প্রভাব পড়বে পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলীয় এলাকাতেও। ২৩ তারিখ সকালে নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে সেটি অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপরই আরেকটু ঘনীভূত হয়ে ২৫ অক্টবর সকালে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ২৫ তারিখ সকালে বাংলাদেশের তিনকোণা দ্বীপ ও সন্দীপের মধ্যে ল্যান্ডফল হবে সিত্রাংয়ের। ইতিমধ্যেই ব্লক প্রশাসন ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে মাইকিং।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct