আপনজন ডেস্ক: ২০১৩ সালের উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগর দাঙ্গার আট বছর পর এই সহিংসতার সাথে জড়িত অন্যান্যদের মধ্যে হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি ও অগ্নিসংযোগ সম্পর্কিত ৯৭টি মামলায় অভিযুক্ত ১,১১৭ জনকে প্রমাণের অভাবে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মুজাফফরনগর জেলার কাওয়াল গ্রামে শচীন ও গৌরব নামের দুই যুবক হত্যার ঘটনায় এক মামলায় সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ২৭ আগস্ট শাহনাওয়াজকে ছয়জন ছুরিকাঘাতে হত্যা করার সাথে সাথে এই দাঙ্গা শুরু হয়। দাঙ্গার ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য সরকার একটি বিশেষ তদন্ত দল (সিট) গঠন করেছিল। সিটের কর্মকর্তাদের মতে, পুলিশ ১,৪৮০ জনের বিরুদ্ধে ৫১০টি মামলা দায়ের করেছে এবং ১৭৫টি মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। সিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, বছরের পর বছর ধরে একটি আদালত ৯৭টি মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যারা প্রমাণের অভাবে অভিযুক্ত ১,১১৭ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রসিকিউশন এই মামলাগুলির মধ্যে কোনওটিতে আপিল দায়ের করেনি। কাওয়াল গ্রামের দ্বৈত হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসআইটি আইপিসির ১৫৩এ এবং ২৯৫এ ধারায় ২০টি মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারেনি কারণ তারা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে মামলা করার অনুমতি পায়নি।
এদিকে, উত্তরপ্রদেশ সরকার দাঙ্গা সম্পর্কিত ৭৭টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিন্তু আদালত মাত্র একটি মামলায় প্রত্যাহারের অনুমতি দিয়েছে যা উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী সুরেশ রানা, বিজেপি বিধায়ক সঙ্গিত সোম, প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ভর্তেন্দু সিং এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতা সাধ্বী প্রাচী সহ ১২ জন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে।
সিট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দাঙ্গা মামলায় অভিযুক্ত ২৬৪ জনকে বর্তমানে বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ২০১৩ সালের মুজফফরনগর দাঙ্গার সময় ৬০ জনেরও বেশি লোক নিহত এবং ৪০,০০০ এরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। যাদের প্রায় সবাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের।
এই দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগ যে সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তারা সবাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। যদিও আরএসএস, বজরং দল কিংবা সুরেশ রানার মতো ব্যক্তিরা কিন্তু ছাড়ই পেয়ে গেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct