দেবাশীষ পাল, কালিয়াচক: মাথা গোঁজার মতো না আছে ঘর আর না আছে খাবার। এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে উঠেছে মালদা জেলার কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বীরনগর।
প্রতিবছর গঙ্গা ভাঙ্গন অব্যাহত বিরনগর এর বিভিন্ন এলাকা জুড়ে জুড়ে। বেশ কিছুদিন গঙ্গা ভাঙ্গন বন্ধ থাকার পর আবারও সোমকার সকাল থেকে প্রায় ২০০ এর অধিক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে, মানুষজন কোথায় যাবে কি খাবে কিছুই বুঝতে পারছে না। যে যেখানে পারছে আগে থেকেই বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্যত্র। সোমবার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সরাসরি ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ তথা কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও তৃণমূল জেলা সভাপতি রহিম বক্সি।
যতদূর চোখ যায় শুধুই ধ্বংসের ছবি। মালদার বৈষ্ণবনগরের বীরনগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের চিনাবাজার, সরকারটোলা, ভীমাগ্রাম, নয়াহাটের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন গঙ্গার গ্রাসে। ভাঙনের জেরে গত কয়েকদিনে ভিটেমাটি, ঘরদোর-সর্বস্ব খুইয়েছেন প্রায় পাঁচশো বাসিন্দা। ভাঙতে চলেছে বীরনগরের একটি তিনতলা ভবনের হাইস্কুলও। সব হারিয়ে পথে বসেছেন এলাকার বহু বাসিন্দা।
সব হারিয়ে কেউ আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় চামাগ্রাম হাইস্কুলে। কারও আশ্রয় খোলা আকাশের নীচে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সোমবার সেখানে পৌঁছান সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি ও মালদার জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র।
মন্ত্রী ও তৃণমূল জেলা সভাপতি, ভাঙনের জন্য সরাসরি তোপ দাগেন ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ তথা কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে। মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ফরাক্কা ব্যারেজের গাফিলতির জন্য আজ এই এলাকার মানুষ বিপদের মধ্যে।
তাই অবিলম্বে ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকে এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যভস্থা নিতে হবে। শীগ্রেই ভাঙন রোধের কাজ শুরু না হলে আন্দোলনের পথে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। রাজনৈতিক তরজা শুরু হলেও গঙ্গার গ্রাসে সর্বস্ব খোয়ানো মানুষগুলো ভালোই জানেন তাদের নিয়তি। তাই নিয়তিকে দোষ দেওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই তাদের। অপেক্ষায় আছেন সাহায্যের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct