নাজমুস সাহাদাত, কালিয়াচক, আপনজন: ফের মালদহের কালিয়াচকের পরিযায়ী শ্রমিকদের মারধর করা হয় উত্তরপ্রদেশে। মালদহের কালিয়াচকের ছোট সুজাপুর সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ২৩ জন বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরের পর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এসে ওই পরিযায়ী শ্রমিকদেরই তুলে নিয়ে গিয়ে আটক করেছে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের পরিবারের। আর তারই জেরে কালিয়াচক থানায় ভিড় জমায় প্রত্যেক পরিবারের লোকেরা।
খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ছুটে যান কালিয়াচক থানায় এবং লিখিতভাবে অভিযোগ করেন পরিযায়ী শ্রমিকদেরর আত্মীয়-স্বজনেরা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কুশিনগর এলাকায়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার পরিযায়ী শ্রমিকরা অর্থাৎ ফেরিওয়ালারা ফেরি শেষ করে রান্নার কাজ করছিল। সেসময় ওই উত্তরপ্রদেশের কুশিনগর এলাকার বেশকিছু সমাজবিরোধী লোকজন তাদের বাসায় ঢুকে আচমকা বেধড়ক মারধর শুরু করে। এবং ওইসময়ই তৎক্ষণাৎ শ্রমিকদের উত্তরপ্রদেশ রাজ্য বা এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিতে থাকে। ঘটনা জানাজানি হতেই ওই উত্তরপ্রদেশের ওই এলাকার পুলিশ এসে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদেরই আটক করেছে। আরও জানা যায়, শ্রমিকরা বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্যেই নাকি তাদের ওপর চড়াও হয় এবং মারধর করে গালাগাল করে বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, এর আগেও বহু রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক, ফেরিওয়ালাদের উপর নানান অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে।
গত বছরে উড়িষ্যা, আসামের মত রাজ্যগুলিতে অমানবিক নির্যাতন ও অত্যাচারের শিকার হয়েছেন কালিয়াচকেরই ফেরিওয়ালা শ্রমিকরা। তাদের কোন দোষ-ত্রুটি ছাড়াই মালপত্র ভাঙচুর করা, ছিনিয়ে নেওয়া, জিনিসপত্র নষ্ট করে দেওয়া, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা, চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি, পিটিয়ে মেরে দেওয়া থেকে শুরু করে নানানভাবে হয়রানির শিকার পরিযায়ী শ্রমিকরা। মালদহের আফ্রাজুলের কথা আজও মানুষের মুখে শোনা যায়, ট্রেনে জামাল মোমিনকে হেনস্থার ছবি জ্বলজ্বল করে, মব লিঞ্চিং এর নামে সেনাউলকে হত্যা, এখানেই প্রশ্ন জাগছে বিভিন্ন মহলে। মালদহের পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে সুরক্ষিত নয় বলে অভিযোগ চরমে উঠেছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা এই ধরনের হয়রানির শিকার হতে বাঁচতে চান।। উত্তরপ্রদেশের এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার। তাদের দাবি যেসব রাজ্যে বেশিরভাগ বাঙালি শ্রমিকরা পেটের দায়ে কাজ করে বিশেষ করে মহারাষ্ট্র, উড়িষ্যা, আসাম, মনিপুর, তামিলনাড়ু, কেরালা, গুজরাতে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয় ওই সব পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের তরফ থেকে। এব্যাপারে তারা রাজ্য সরকারকে কড়া পদক্ষেপ চান। যদিও পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct