নিজস্ব প্রতিবেদক, মালদা, আপনজন: শিক্ষক মোক্তার হোসেন স্বপ্ন দেখেছিলেন ছেলে নিট প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভবিষ্যতে ডাক্তার হবে। কিন্তু তার ছেলেক মুক্তি পণ চেয়ে তার পর অপহরণ করে কুন করায় তিনি একেবারেই ভেঙে পড়েছেন। নিউটাউনে নিটের কোচিং নিতে যাওয়া ছেলে সাজিদ হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় বাবা মোক্তার হোসেনের সাজানো বাগান যেন এক লহমায় ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। সব স্বপ্নে ধুলোয় মিশিয়ে গেল। তিনি নিজে শিক্ষকতার পাশাপাশি নিজের ছেলে মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করার পাশাপাশি নিজের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন একটি স্কুলও। আনন্দ পাঠভবন নামে ওই স্কুল চালু করেছেন। শিক্ষার প্রসার ও সমাজকর্মী হিসেবে সুপরিচিত তিনি। মানুষের মঙ্গলের জন্য তিনি সচেষ্ট থাকেন। ছেলের মৃত্যুতে আর কোনো পিতা-মাতার সন্তানের এরকম ঘটনা আর না ঘটে সেই আর্তি রেখেছেন প্রশাসনের কাছে। গ্রামবাসী থেকে শুরু করে বাবা মা ঘটনার সাথে জড়িতদের উপযুক্ত ফাঁসি শাস্তির দাবি করেছেন। ওই এলাকায় অপরাধচক্র গড়ে উঠেছে এলাকায় নজরদারিও যে সকল ছেলে পড়তে বাইরে যাচ্ছে তাদের পরিবার সহ সবাই আরো বেশি সচেতন থাকার আবেদন করেন। ১৬ মাইল ঈদগাহ ময়দানে জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়। সেখান থেকে পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে দশটা নাগাদ কবর দেওয়া হয় ও দোয়া পাঠ করেন উপস্থিত সকল মানুষ জন। মৃতের বাবা জানাজার নামাজ শুরু হওয়ার পূর্বে সকলকে ছেলে জন্য দোয়া করতে বলেন।
জীবন যুদ্ধে জয় পরাজয় আছে তবে এই ধরনের ঘটনা তীব্র নিন্দা করেছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। গ্রামবাসীদের বক্তব্য ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে দ্রুততার সাথে তাদের শাস্তি দেওয়া হোক।নিট পরীক্ষার্থী সাজিদ আর নেই, এ কথা এখনও ভাবতেই পারছেন না বৈষ্ণবনগর থানার ১৬ মাইল গুরুটোলাবাসী। গ্রামের ছেলেকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। শোকাহত গোটা গ্রাম। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সাজিদের মা সামিনা। শোকে কাতর পরিবারের সকলেই।গত মাসে নিউ টাউনের হোস্টেলে খাবার খেতে গিয়ে সাজিদের কব্জিতে গরম খিচুড়ি পড়ে গিয়েছিল। তার হাত সামান্য ঝলসে যায়। তখন বাবা-মায়ের পীড়াপীড়িতে ছেলে বাড়ি ফিরে আসে। তার মা সামিনা খাতুন বলেন,‘বেশ কয়েক মাস ছেলে বাইরে ছিল। হাত পুড়ে যাওয়ায় ছেলেকে বাড়ি ডেকে নিয়েছিলাম। কিছুদিন ছিল এখানে। নিজের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে বলে আবার ফিরে যায়।আমি ভাবতেই পারছিনা ছেলে আর নেই।উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর গত আট মাস আগে নিটের প্রস্তুতির জন্য নিউ টাউনে যায় সাজিদ। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার। সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।’