আপনজন ডেস্ক: কাশ্মীরের এক কৃষক সন্তান সম্মানজনক ইন্ডিয়ান ইকনমিক সার্ভিস বা আইইএস পরীক্ষায় দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করলেন কাশ্মীরি যুবক তানভির আহমেদ খান। শনিবার ২০২০ সালের ইন্ডিয়ান ইকনমিক সার্ভিস বা আইইএস পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। তা দেখা গেছে, দক্ষিণ কাশ্মীরের শ্রীনগর শহর থেকে প্রায় ৮০ কিমি দূরে কুলগাম জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম নিগিনপুরা কুণ্ড থেকে উঠে এসেছেন তানভির। বাবা কৃষি কাজ করেই সংসার নির্বাহ করেন। সেই পরবিারে এখন খুশির জোয়ার ছেলের এই অনন্য কৃতিত্বে।
তার এই কৃতিত্বে ট্যুইট করে তানভির ও তার পরিবারকে সাধূবাদ জানিয়েছেন, জম্মু কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ সিনহা।
ছোট বেলা থেকেই খুবই মেধাবী। গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পাঠ শেষ করে ওয়ালটেনগো সরকারি হাইস্কুলে ভর্তি হন। তারপর অনন্তনাগে সরকারি কলেজে কলা বিভাগে ভর্তি হন। ২০১৬ সালে স্নাতক হন। এমএ পাশ করার পর নেট পরীক্ষার মাধ্যমে জুনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন। এমফিল করার জন্য তিনি বেছে নেন কলকাতার ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ। আর সেটাই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
করোনা পরিস্থিতি আর ৩৭০ ধারার টানাপোড়েনে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল কাশ্মীরিদের মনে সেসব দূরে ঠেলে দিয়ে নীরবে কঠোর অধ্যবসায় সাফল্য এনে দিল তানভিরকে। চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে যে পাঠ নিয়েছেন সেটাই কৃষক পরিবারকে খুশির জোয়ার এনে দিয়েছেন।
কলকাতায় এমফিল করার সময় তার বাবা কৃষিকাজে যুক্ত থেকে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। নিজেও কলকাতায় কিছু সময় রিকশা চালিয়েছেন। তবে, তার এই সাফল্যের পিছনে বিশেষ অবদান রয়েছে কলকাতায় এমফিল করার। এমফিল করার সময় কলকাতায় এক কর্মশালা যোগ দেওয়ার সময় এক বন্ধুর মাধ্যমে সন্ধান পান যে কেরালা কলেজের অধ্যাপক রাঠিস কৃষ্ণান আইইএস প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। তারপর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কৃষ্ণানের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তিনি তার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তানভিরকে যোগ করে নেন। অনলাইন পাঠ নেওয়ার সময় কৃষ্ণান তানভিরকে বলেছিলেন, চেষ্টা করলে সুযোগ পাবেন।
তাই দিনে ১০-১৪ ঘণ্টা পড়তেন। যদিও ৬-৮ ঘণ্টা পড়লেই চলত। কিন্তু অতিরিক্ত পড়তেন নিজেকে আরও তৈরি করারর জন্য। মাত্র ৮৪ দিনে পুরোপুরি তৈরি হয়ে পরীক্ষায় বসেন। আর তাতেই তিনি আইইএস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তাই তানভির সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, কলকাতার কর্মশালা থেকে অধ্যাপক কৃষ্ণানের সন্ধান না পেলে তার এই সাফল্য এত তাড়াতাড়ি আসত কিনা সন্দেহ। তাই তানভির কলকাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct