নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আপনজন: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মামলার শুনানি চলে । এদিন শুনানির সময়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কোনও আধিকারিক উপস্থিত না থাকায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, - 'ব্যক্তিগত ভাবে সিবিআইয়ের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন ছিল।'কেন সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে তিনি কথা বলতে চাইছেন? তা অবশ্য স্পষ্ট করে তিনি বলেননি। তবে ইঙ্গিত অবশ্যই দিয়েছেন বিচারপতি। মানিক ভট্টাচার্য সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে তিনি বলেন, - 'যে সব প্রভাবশালী ব্যক্তিকে দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআই জেরা করেছে বা যারা সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন তাঁদের প্রয়োজনে গ্রেফতার করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি।' এরপরই তিনি আবার প্রশ্ন করেন, -' যে ৬ জনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পরে কি আর কারও নাম উঠে এসেছে? তা ছাড়া যাঁরা তদন্তে সহযোগিতা করছেন না, তাঁদেরও সিবিআই চাইলে গ্রেফতার করতে পারে। ব্যাপারে সিবিআইকে পরিষ্কার নির্দেশ দিচ্ছে আদালত'।এদিন শুনানির সময়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, -' সিবিআইকে বলছি, যেটা ভুল সেটা ভুলই, যেটা ঠিক সেটা ঠিক। এ কথাটা মাথায় রেখে তারা যেন কাজ করে'।এর আগে বিচারপতি বলেছিলেন, -' কাদের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ড ঘটেছিল, তাঁদেরও খুঁজে বের করতে হবে'। কোনও প্রভাবশালীকে যে রেয়াত করা হবে না তা নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে মত প্রকাশ করে চলেছেন তিনি। এমনকি গত বৃহস্পতিবারও শুনানির সময়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, দুর্নীতি কাণ্ডের নেপথ্যে যে বা যাঁরা রয়েছেন তাঁদের গ্রেফতার হয়তো জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারব না। তবে যথাসাধ্য করে যাব।বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এদিনের নির্দেশ তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, আদালত সিবিআইকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে, -'প্রভাবশালীদের নিয়ে ইতস্তত করার দরকার নেই। তদন্তের স্বার্থে যে কোনও লোককেই হেফাজতে নিতে পারে তারা'।এখন দেখার সিবিআই কলকাতা হাইকোর্টের এহেন অবস্থান জেনে টেট নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় তদন্তের গতি কতটা বৃদ্ধি ঘটায়?
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct