এহসানুল হক, বসিরহাট, আপনজন: ইছামতি নদীর পাড়, বা বিভিন্ন নদীর চরে ইটভাটা নয়। রাজ্যের নদীচরে থাকা সব ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার এই মামলার আইনজীবী তুষার সিংহ মহাপাত্র জানান, শুধু ইটভাটা বন্ধ নয়, সেগুলি ভাঙার নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। আর এই রায়দানের পরেই আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বসিরহাটের ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকরা। নদীমাতৃক বসিরহাট মহকুমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ইটভাটা। তৈরি ইট কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায়। মহকুমার স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া, মিনাখাঁ, হিঙ্গলগঞ্জ ও সন্দেশখালি ১ ও ২ নং ব্লক সহ ১০টি ব্লক জুড়ে ইছামতি, বিদ্যাধরী, গৌড়েশ্বর ও কলাগাছী সহ একাধিক নদী পাড়ে বা চরে রয়েছে ৫৬৯টি ইটভাটা। নদীর পলি মাটি থেকেই তৈরি হয় ইট। তাই বেশিরভাগ ইটভাটাই নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে। কথাও আইনি কোথাও বা বেআইনি ভাবে সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা মেলে এই ভাটা গুলির। আর হাইকোর্টের এই নয়া ফরমানে যথেষ্টই শঙ্কিত ভাটার মালিক থেকে শুরু করে শ্রমিকরা। যদি হাইকোর্টের নির্দেশ মতো নদীপাড়ে বা চরে থাকা ভাটাগুলি ভেঙে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে প্রবল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বেন মালিকরা। পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে শ্রমিকদের। বসিরহাটের বিভিন্ন ভাটাগুলিতে কাজ করতে আসেন ভিন জেলা তথা ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা।
সংসার চালানো এক প্রকার দায় হয়ে যাবে তাদের। বসিরহাট জেলার আইএনটিটিইউসি নেতা কৌশিক দত্ত জানান, তারা আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছেন। কিন্তু ডাটা বন্ধ হয়ে গেলে কর্মহীন বহু শ্রমিকরা। শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান নিয়েও সরব হচ্ছেন তারা। পাশাপাশি এদিন বেঙ্গল ব্রিকফিল্ড অনার অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং উত্তর ২৪ পরগনা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি উদয় চন্দ্র মন্ডল জানান, আদালতের এই রায় সঠিক, নদী তথা প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই বেআইনি ভাটাগুলির জন্য। কিন্তু তিনি স্মরণ করিয়ে দেন সবকটা বন্ধ করা যাবে না। পাশাপাশি তিনি বলেন, বহু ভাটা রয়েছে নদীমাতৃক চর এলাকায় সেই সব অবৈধ ভাটার জন্য মার খাচ্ছে আসল মালিকরা। আমি সরকারের কাছে আবেদন করব যেসব ভাটার এখনও কাগজ পত্র হয়নি সেইসব ভাটার কাগজপত্র অবিলম্বে ঠিক করে নেওয়ার জন্য। এই ভাটা বন্ধ হলে হাজার হাজার শ্রমিক অনাহারে মরবে, পাশাপাশি বহু ভাটার মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আমরা হাইকোর্টে যাব এই রায় নিয়ে। তাই এগুলি বন্ধ হওয়া খুবই জরুরি। এদিন ভাটা মালিক পাশাপাশি বসিরহাটের তৃণমূল নেতৃত্ব শাহানুর মন্ডল বলেন, হাইকোর্টের রায় কে আমরা মান্যতা দিই। নদীর চরে বহু ভাটা রয়েছে।সেই সব অবৈধ ভাটা গুলোর যদি সমশ্যা থাকলে একটু দুই চারবছর সময় দিয়ে ঠিক করে নেওয়া।যদি সময় না দেওয়া হয় তাহলে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হবে শ্রমিকরা ও ভাটা মালিকরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct