আপনজন ডেস্ক: ২০২০ সালে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি বাংলাদেশের চেয়েও কম হতে পারে, এমন সংবাদমাধ্যমে ঘোরাফেরা করছে।করোনাকালীন ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও চরম আকার ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর এ সংক্রান্ত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক প্রকাশের বিশ্ব ব্যাংকের প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু টুইট করে বলেন, 'যেকোনও উদীয়মান অর্থনীতি ভাল করছে, সেটি অবশ্যই ভাল খবর। তবে অবাক করে দেওয়ার মতো বিষয় হল, পাঁচ বছর আগে যে ভারতের অর্থনীতি ২৫% এগিয়ে ছিল এখন তারাই পেছনে পড়ে যাচ্ছে।' ১৯৯০-এর দশক থেকেই ভারতের স্বপ্ন চীনের দ্রুত সম্প্রসারণকে অনুকরণ করা। তিন দশক ধরে এই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের পিছনে ছিটকে পড়ার ঘটনা নিশ্চয়ই ভারতের বৈশ্বিক ভাবমূর্তিতে একটি আঘাত।
পশ্চিমাবিশ্ব চীনের বিপক্ষে একটি অর্থবহ কাউন্টারওয়েট চায়। নিম্ন-মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকা না পড়লে সেই অংশীদারিত্বের বিষয়টি ভারতের ওপরই বর্তায়। তুলনামূলক এই অদক্ষতা আত্মবিশ্বাসও কমে দিতে পারে। যদি একটি বৃহৎ-শক্তিশালী ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী রাষ্ট্র তার নিজের ছোট্ট একটি প্রতিবেশি দেশের পেছনে পড়ে যায়, এতে দক্ষিণ এশিয়া এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে তাদের প্রভাব হ্রাস পেতে পারে। এ জন্য করোনাভাইরাস মহামারীকে অবশ্যই দোষ দেওয়া যায়। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ জুনের মাঝামাঝি সময়ে শীর্ষে পৌঁছেছিল। আর ভারতের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এখন কমতে শুরু করেছে। কিন্তু তার আগে অধিকাংশ দেশের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। ১৬৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার বাংলাদেশে করোনায় ৫ হাজার ৬শ’রও কম মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে। আর ৮ গুণ বেশি জনসংখ্যার দেশ ভারতে বাংলাদেশের চেয়ে করোনায় ২০ গুণেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে খারাপ খবর– আইএমএফ জানিয়েছে, করোনা বিস্তার ঠেকাতে ভারতের আরোপিত কঠোর লকডাউন প্রকৃত উৎপাদনের ১০.৩% হ্রাস করে দেবে। এটি করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে যে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, তার চেয়েও প্রায় ২.৫ গুণ বেশি। আর্থিক সঙ্কট, স্বল্প পুঁজিযুক্ত আর্থিক ব্যবস্থা এবং বহুবর্ষ বিনিয়োগের ভীতি-এসব ভারতের কোভিড পরবর্তী চাহিদা পুনরুদ্ধারকে বিলম্বিত করবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct