রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ: মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে আবারও ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন দেখা দিল। গত বছরের স্মৃতি উস্কে আবারও সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখল নদী পারের মানুষ, চোখের সামনে নদীতে তলিয়ে গেল আস্ত ঘর, একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছে জমি জায়গা। চোখে জল আর একরাশ হতাশা নিয়ে নদী পারে আর্তনাদ আর হাহাকার। গভীর রাতে ধেয়ে এলো গঙ্গা। সোমবার বিকেল থেকেই শুরু হয়েছে ভাঙন সামসেরগঞ্জের লোহরপুরে যা নতুন শিবপুর নামেই পরিচিত। কয়েক বিঘা জমি, আম বাগান, লিচু বাগান সম্পূর্ণরূপে তলিয়ে গিয়েছে ধানঘরায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
ইতিমধ্যেই নতুন শিবপুরে দশ টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েগেছে। আতঙ্কে ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের। রাত জাগা গ্রাম, সঙ্গী গঙ্গার ভয়াবহতা। ইতিমধ্যে বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটুকু নিয়ে এলাক ছেড়ে পালিয়েছেন অনেকেই।এক বছরের মাথায় ওই এলাকায়তেই আবারও ভাঙন দেখা দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
তবে রাজ্য সরকারের সেচ দফতরের তরফে সেসময় সামসেরগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙন রোধের জন্য বালির বস্তা দিয়ে কাজ শুরু হয়। ফারাক্কা ও সামসেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক কোটি টাকা অর্থও বরাদ্দ করে রাজ্য সেচ দফতর। সেই মতো বালির বস্তা দিয়ে নদী বাঁধানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু বালির বস্তা দিয়ে গঙ্গার পাড় বাঁধানো সম্ভব হয়নি। ফলে এক বছরের মাথাতেই নতুন করে শুরু হয়েছে ভাঙন। মঙ্গলবার সকাল থেকে তছনছ গোটা গ্রাম। ভাঙন এই এলাকার মানুষের কাছে অভিশাপ। প্রতি বছর বর্ষার শুরু এবং শেষে ভাঙনের ভয়াবহতা সামনে আসে। এবারেও হল পুনরাবৃত্তি। আতঙ্কে ইটের পাকা বাড়ি ভেঙে ফেলছেন অনেকেই।
প্রাণ বাঁচাতে গ্রাম ছাড়ছেন কেউ কেউ। সোমবার প্রশাসনিক ভাবে গতবছর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের ১৪০ টি পরিবারকে জমির পাট্টা তুলে দিয়ে ছিলেন বিদ্যুৎ পতি মন্ত্রী আখরুজ্জামান। নতুন শিবপুর গ্রামের ৪০ টি পরিবার পাট্টা পেয়েছে। আর তারমধ্যেই ফের ভাঙন। পরিবার পরিজন নিয়ে খোলা আকাশের নীচে ঠাই পরিবারগুলির আপাতত আশ্রয়স্থল স্থানীয় স্কুলে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct