নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর: চিকিৎসা না পেলে বিষপানে আত্মঘাতী হবে গোটা পরিবার। পরিবারের আত্মঘাতীর হুমকির খবর শুনে অসুস্থ পরিবারের পাশে দাড়িয়েছে গোটা গ্রাম। স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে জটিল রোগে শয্যাসায়ী। শারীরিক দুর্বলতার কারণে একাই চলতে পারে না। বিছানায় শুয়ে শুয়ে রাতদিন কাতরাতে থাকে।অপরদিকে স্বামীও একচোখে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। হয়নি প্রতিবন্ধী শংসাপত্র। রয়েছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড।কোথায় গেলে মিলবে চিকিৎসা তা তারা দিশেহারা।তাহলে কি চিকিৎসার অভাবেই মারা যাবে স্ত্রী?
এমন এক পরিবারের দুর্দশার চিত্র ধরা পড়েছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাঙ্গর গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাঙ্গর গ্রামের বাসিন্দা সায়েদ আলির স্ত্রী আফরোজা বিবি (৩০) দীর্ঘদিন ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত। ধারদেনা ও সুদে টাকা নিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালেও এখনো পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেনি। করতে হবে অপারেশন। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন অপারেশন করতে খরচ হবে তিন লক্ষ টাকা। কোথায় পাবে এত টাকা।আত্মীয়-স্বজনদেরও পক্ষে এত টাকা সাহায্য করা সম্ভব নয়। অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তার উপরে স্ত্রী জটিল রোগে আক্রান্ত। স্থানীয় নেতাদের কাছে গিয়েও মেলেনি কোনও সাহায্য, বলে ক্ষোভ। আত্মীয়স্বজনেরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে চাঁদা তুলে তার চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
সায়েদ আলি পেশায় একজন দিনমজুর। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে এলাকায় সেরকম কাজ জোটে না। রেশন থেকে যা চাল পায় তা দিয়ে চলে সংসার। পরিবারে রয়েছে স্ত্রী সহ দুই নাবালক সন্তান ও এক মেয়ে। লবণ ভাত খেয়ে কাটছে দিন।কবে মিলবে সরকারি চিকিৎসা সেই আশায় দিন গুনছ গোটা পরিবার।
সায়েদ আলি জানান, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও মিলছে না চিকিৎসা। ভোটের সময় ছাড়া নেতাদের দেখা যায় না। সাহায্য চাইতে গেলে আশ্বাস ছাড়া কিছুই মিলে না। মজুত যা অর্থ ছিল তা চিকিৎসা করাতে গিয়ে সব শেষ হয়ে গেছে। সুদে টাকা নিয়ে ধার দেনা করে কোনোরকম স্ত্রীর পথ্য জোগাড় করেন। সরকারিভাবে চিকিৎসা না পেলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে জানান তিনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct